বাসকর্মীদের মারের নালিশ

নজরদারি আলগা হতেই চাঁদার ‘জুলুম’

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মাস দেড়-দুই ধরেই রাস্তা আটকে প্রকাশ্যেই চলছে চাঁদা আদায়। কোথাও আবার তেলের পাইপ দিয়ে বাস-লরি আটকানো হচ্ছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দাসপুর শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

পুলিশি নজরদারি থিতোতেই চাঁদার রসিদ হাতে পথে!

Advertisement

রাস্তা আটকে জোর করে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় ঘটেছে প্রাণহানি। এরপর জোর কদমে অভিযানেও নামে পুলিশ। কিন্তু ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মতো চাঁদা না দেওয়ায় বাস আটকে চালক সহ বাস-কর্মীদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল। পুজো উদ্যোক্তাদের দৌরাত্ম্য প্রকাশ্যে আনতে রাস্তায় আড়াআড়ি ভাবে বাস দাঁড় করিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন বাসকর্মীরা। বুধবার সন্ধ্যায় ঘাটাল-মেদিনীপুর সড়কে দাসপুর থানা সংলগ্ন ডিহিচেতুয়ার এলাকার এই ঘটনায় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। থানায় মামলা করেছেন বাস কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পরই অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়েছে।

মঙ্গলবারই ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কে বাস-লরি আটকে চাঁদা আদায় করার সময় রাজেশ দোলই নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। দাসপুর শহরে ওই ঘটনার পরই বুধবার সকাল থেকেই চাঁদা আদায় বন্ধে উদ্যোগী হয় পুলিশ। ঘাটাল, দাসপুর ও চন্দ্রকোনার একাধিক সড়কে সাদা পোশাকের পুলিশ অভিযানে নামে। পুলিশের টহলরত গাড়িও ঘুরে বেড়ায়। সূত্রের খবর, বুধবার সন্ধ্যার পর পুলিশি নজরদারি একটু থিতোতেই লাঠি-রড নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন কালী পুজোর উদ্যোক্তাদের একাংশ।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার সন্ধ্যার দিকে দাসপুর থানার ওই সড়কে ডিহিচেতুয়ার কাছে চাঁদা তুলছিলেন একদল যুবক। ওই সময় মেদিনীপুর থেকে ঘাটালের দিকে আসছিল একটি বাস। সংশ্লিষ্ট বাসের কন্ডাক্টর অশোক দাসের অভিযোগ, “দাবিমতো চাঁদা না দেওয়ায় আচমকাই মারধর শুরু করে। চালককেও মারধর করা হয়। বাস থেকে নামিয়ে লাথিও মারা হয়। বাঁশ দিয়ে বাস ভাঙচুরের চেষ্টাও হয়। এরপরই আমরা রাস্তায় আড়াআড়ি ভাবে বাস দাঁড় করিয়ে দিই।”

এমনিতেই ঘাটাল-মেদিনীপুর (ভায়া নাড়াজোল) সড়কটি গুরুত্বূপূর্ণ। আড়াআড়ি ভাবে বাস দাঁড়ানোর জেরে মুহুর্তের মধ্যেই ব্যাপক যানযটের সৃষ্টি হয়। আটকে পড়ে একাধিক বাস-ট্রাক। ঘটনার কথা শুনেই অন্য গাড়ির চালকরাও সংশ্লিষ্ট বাস কর্মীদের পক্ষ নেয়। খবর পেয়েই পুলিশ পৌঁছে যায়। উপযুক্ত তদন্ত এবং মারধরে জড়িতদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মাস দেড়-দুই ধরেই রাস্তা আটকে প্রকাশ্যেই চলছে চাঁদা আদায়। কোথাও আবার তেলের পাইপ দিয়ে বাস-লরি আটকানো হচ্ছে।

দাবি মতো টাকা না পেয়ে পরিবহণ কর্মীদের নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই জুটছে হুমকি। এক পরিবহণ কর্মীর স্বীকারোক্তি, “রসিদে যা লেখা থাকছে তাই দিতে হবে। কম দিলেই রাস্তা দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।” জেলার এক পদস্থ পুলিশ কর্তা বললেন, “ধরপাকড় চলছে। এমন ঘটনা কানে এলেই মামলা করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন