Extra marital Affair

Extra-marital affair: বাকচায় যুবক খুনে গ্রেফতার স্ত্রী ও ভাই

পুলিশ তদন্তে নামার পরেই খুনের ঘটনায় বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়টি সামনে আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২২ ০৭:০৩
Share:

বিচারক ধৃতদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। নিজস্ব চিত্র।

বাকচায় নিকাশিখাল থেকে যুবকের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় খুনের অভিযোগে স্ত্রী ও ভাইকে গ্রেফতার করল পুলিশ। গত বুধবার সকালে স্থানীয় চাঁদিবেনিয়া গ্রামে বাড়ির সামনে খালে কৃষ্ণ পাত্র’র (৪০) দেহ উদ্ধার হয়।

Advertisement

মৃতদেহের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন থাকায় তাঁকে খুন করা হয়ে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তাদের দলের কর্মী কৃষ্ণকে খুন করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। যদিও তৃণমূল ব্লক নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকরা করে জানিয়েছিল পারিবারিক কারণেই ওই ব্যক্তিকে কেউ খুন করেছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।

পুলিশ তদন্তে নামার পরেই খুনের ঘটনায় বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়টি সামনে আসে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে কৃষ্ণের স্ত্রীর সাথে তাঁর এক ভাইয়ের সম্পর্ক নিয়ে আপত্তির কারণেই এই খুন। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কৃষ্ণর স্ত্রী ও এক ভাইকে আটক করা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্ত্রী ও ভাইয়ের কথাবার্তায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে। খুনের ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাদের হাতে এসেছে। যাতে খুনের ঘটনায় স্ত্রী রূপালি ও এক ভাই বলরামের জড়িত থাকার বিষয়টি আরও জোরাল হয়। এরপরেই ওই দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কৃষ্ণের বাড়ির কিছু দূরেই তাঁর এক ভাই বলরামের বাড়ি। বলরামের স্ত্রী ও ছেলে রয়েছে। অভিযোগ, কৃষ্ণের স্ত্রী রূপালির সঙ্গে বলরামের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এই নিয়ে আপত্তি কৃষ্ণ জানানোয় পারিবারিক অশান্তি শুরু হয়েছিল। বছর দু’য়েক আগে গ্রামে সালিশি সভাও ডাকা হয়। কিন্তু তারপরেও রূপালির সঙ্গে বলরামের সম্পর্ক থাকার বিষয়টি জানতে পেরে সম্প্রতি রূপালির মোবাইল ফোন থেকে ‘সিম’ খুলে নিয়েছিল কৃষ্ণ। বাড়িতে আসা ভাই বলরামকে তাড়িয়েও দিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, এই সব ঘটনায় কৃষ্ণের উপরে দু’জনের ক্ষোভ তৈরি হওয়ায় তারা কৃষ্ণকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। দেহ উদ্ধারের পর দেখা যায় ধারালো কিছু দিয়ে কৃষ্ণের মাথায় ও ডান কানের পিছনে একাধিক বার আঘাত করা হয়েছে। বাড়ির সামনে খালে যেখানে কৃষ্ণের মৃতদেহ পড়েছিল তা বাড়ির ভিতর থেকে দেখা যায়। কিন্তু সকালে কৃষ্ণের বাড়ির দরজায় বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল। কৃষ্ণের স্ত্রী প্রতিবেশী কাকিমাকে ডেকে জানায় স্বামীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এতেই পুলিশের সন্দেহ বাড়ে। বাড়ির সামনে খালে স্বামীর মৃতদেহ পড়ে থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে তা তার নজর এড়িয়ে গেল! তা ছাড়া বাড়ির বাইরে থেকে দরজায় তালাই বা দিল কে! কৃষ্ণের মৃতদেহ উদ্ধারের পরেও বলরাম নিজের বাড়িতেই ছিল।

পুলিশ সূত্রে খবর, বলরামের কাছ থেকে উদ্ধার মোবাইল ফোন থেকে রাতে যাদের কাছে ফোন গিয়েছিল তার কথোপকথনে কিছু তথ্য মিলেছে। যাতে খুনের ঘটনায় তার জড়িত থাকার অভিযোগ জোরাল হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্তের স্বার্থে ‘স্নিফার ডগ’ আনা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন