কৃষি যন্ত্রের প্রদর্শনী।—নিজস্ব চিত্র।
মান্ধাতার আমলের পদ্ধতিতে নয়, কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে চাষের পাঠ শেখাতে সম্মেলনের আয়োজন হল খড়্গপুর আইআইটিতে। শুক্রবার সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আইআইটি-র উপ-অধিকর্তা শ্রীমান ভট্টাচার্য, আইআইটি-র কৃষি প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান বীরেন্দ্রকুমার তিওয়ারি, অধ্যাপক কমলেশনারায়ণ তিওয়ারি প্রমুখ। সম্মেলনে দুই মেদিনীপুর ছাড়াও হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার চাষিরাও উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি নিয়ে এ দিন প্রদর্শনীরও আয়োজন হয়।
প্রতি বছর আইআইটি-র উদ্যোগে ‘এগ্রি এক্সপো’-এর আয়োজন হয়। এতে চাষিদের বিভিন্ন আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির খুঁটিনাটি হাতেকলমে শেখানো হয়। আগামী ২৪-২৬ ফেব্রুয়ারি ‘এগ্রি এক্সপো’ আয়োজিত হবে। তার আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের ‘উন্নত ভারত অভিযান প্রকল্প’-এ সারা ভারত সমন্বিত গবেষণা পরিকল্পনা-র উদ্দেশ্যে কৃষক সম্মেলনের আয়োজন হল। সম্মেলনে কৃষি প্রযুক্তির নানা দিক নিয়ে চাষিদের প্রশ্নের উত্তর দেন বিশেষজ্ঞরা। এক কৃষক প্রশ্ন করেন, চাষের খেতে কীটনাশক দেওয়ার সময় প্রায়ই সাপের ছোবলে আক্রান্ত হন চাষি। এ ক্ষেত্রে বাঁচার উপায় কী? বিশেষজ্ঞরা সাপের থেকে বাঁচতে গামবুট ব্যবহারের পরামর্শ দেন। কৃষিজমিতে কাজের সময় বজ্রাঘাতে মৃত্যুর ঘটনার কথাও প্রায়ই শোনা যায়। এ বিষয়ে কৃষি প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান বীরেন্দ্রকুমারবাবু বলেন, “চাষের জমিকে বজ্রপাতের হাত থেকে বাঁচানো কঠিন। তবে আমরা নিশ্চয় কোনও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের চেষ্টা করব।”
ধান কাটা ও রোওয়া, আর্দ্র জমি থেকে আগাছা তোলার মতো একাধিক কাজের আধুনিক যন্ত্রপাতি দেখানো হয় প্রদর্শনীতে। এই যন্ত্রগুলি ব্যবহার পদ্ধতিও শেখানো হয় চাষিদের। পাশাপাশি ছোট জমিতে ব্যবহারের জন্য আইআইটি-র গবেষণায় আবিষ্কৃত উন্নত প্রযুক্তির ‘ড্রাম সিডার’, ‘পাডলার’, আগাছা কাটার যন্ত্রও দেখানো হয়।
সম্মেলনে অনেকেই প্রশ্ন করেন, উপকারী হলেও এই যন্ত্রগুলির অধিকাংশেরই লক্ষাধিক টাকা দাম। এই যন্ত্র কেনার ক্ষমতা না থাকলে শুধু ব্যবহারের পদ্ধতি জেনে লাভ কী? বীরেন্দ্রকুমারবাবু বলেন, “গ্রামে একসঙ্গে অনেক চাষি মিলে টাকা জোগাড় করে এই যন্ত্র বাজার থেকে কিনে ব্যবহার করা যেতে পারে। এরফলে এককালীন টাকা ব্যয় করে অনেক বেশি লাভ করা যাবে।”