চলছে চাষ। —নিজস্ব চিত্র।
গত বছর আলুর দাম ভাল ছিল। এ বছরও ভাল লাভের আশায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে জলদি জাতের আলু চাষ। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন ব্লকে চার-পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে জলদি আলু চাষ হয়ে গিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, গত বছর জলদি জাতের আলু চাষ কম হয়েছিল। তবে এ বার বাজারে খুচরো আলুর দাম ভাল। সঙ্গে বীজ আলুর দামও কম। পরিবেশও আলু চাষের পক্ষে অনুকূলই। সব মিলিয়েই জলদি জাতের আলু চাষে চাষিদের উৎসাহও চোখে পড়ার মতো।
কৃষি দফতরের সহ-আধিকর্তা (তথ্য) দুলাল দাস আধিকারী বলেন, “বৃষ্টি-বন্যার জেরে জেলায় গত বছর খরিফ চাষ দেরিতে হয়েছিল। ফলে জলদি আলু চাষ করতে পারেন নি অনেক চাষিই। এ বারও কিছু ব্লকে সমস্যা হয়েছিল। তবে এর ফলে জলদি জাতের আলু চাষে প্রভাব পড়বে না।”
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, প্রতি বছর মরসুমি আলু চাষের আগে জেলার বিভিন্ন ব্লকে জলদি জাতের আলু চাষ হয়। এমনকী, বহু চাষি জলদি জাতের আলু জমি থেকে তুলে ফের সেই জমিকেই চাষের উপযুক্ত করে নতুন করে মরসুমি আলু চাষ করেন। জলদি জাতের আলু চাষ করে চাষিরা যেমন ভাল টাকা লাভ করেন, তেমনই সাধারণ মানুষও পুরনো আলু ছেড়ে নতুন আলু কেনেন। জেলায় ফি বছর গোয়ালতোড়, ঘাটাল, গড়বেতা, ডেবরা, দাসপুর, চন্দ্রকোনা, শালবনি, চন্দ্রকোনা রোড-সহ বিভিন্ন ব্লকে ১৫-২০ হাজার হেক্টর জমিতে জলদি জাতের আলু চাষ হয়। সাধারণত অক্টোবর মাস থেকেই চাষিরা জলদি জাতের আলু চাষ করেন। আর ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাজারে নতুন আলু বিক্রি শুরু হয়। মরসুমি আলু লাগানোর শেষ সময় ডিসেম্বর মাস। ওই আলু মাঠ থেকে ওঠে মার্চ মাসের গোড়া থেকে।
গত বছর জেলায় আলুর চাষ তুলনামূলক কম হয়েছিল। ফলে দামও ছিল ভাল। মাঠ থেকেই ১০০০-১২০০ টাকা কুইন্ট্যাল দরে বিক্রি হয়েছিল। ফলে এবারও লাভের আশায় জলদি জাতের আলু চাষে উৎসাহ বেড়ে গিয়েছে। অন্য দিকে এ বার বীজ আলুর দামও কম। পঞ্জাবে বেশি আলু উৎপাদন হওয়ার জন্য এ বার বীজ আলু ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় (প্রতি বস্তা) বিকোচ্ছে। গত বছর এই বীজ আলুই বিক্রি হয়েছিল প্রতি বস্তায় ১৫০০-১৭০০ টাকা। তাতেও ভাল দাম থাকায় চাষিদের লোকসানের মুখে পড়তে হয়নি।