মৃত্যুর পর মেয়েকে ‘রেফার’ করা হয়েছিল কলকাতায়! তদন্ত কমিটির কাছে এমনই অভিযোগ করলেন মৃতের বাবা।
চিকিৎসায় গাফিলতিতে সর্পদষ্ট রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এই ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর আত্মীয়েরা। কর্তৃপক্ষ তদন্তের আশ্বাস দেন।
ঘটনার ১৪ দিন পর, মঙ্গলবার মৃত কলেজ ছাত্রী অঙ্কিতা মাইতি-র বাবা গোপাল মাইতির সঙ্গে কথা বললেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপালবাবু কমিটির তিন সদস্যের কাছে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়েছে জানার পরেও চিকিৎসকেরা মৃত মেয়েকে কলকাতায় ‘রেফার’ করেন! এই বয়ানের সমর্থনে গোপালবাবুর যুক্তি, “মেয়েকে ‘রেফার’ করার পর কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে দেখে ফের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজেই নিয়ে আসি। ইমার্জেন্সিতে থাকা চিকিৎসক মেয়েকে দেখেই মন্তব্য করেন যে, ‘এ তো ৩ ঘণ্টা আগে মারা গিয়েছে!’ একই হাসপাতালের চিকিৎসকের এই মন্তব্য কী প্রমাণ করে না যে মৃত্যুর আমার মেয়েকে ‘রেফার’ করেছিলেন চিকিত্সকেরা।” এ নিয়ে অবশ্য মন্তব্য করতে রাজি হননি মেডিক্যালের সুপার তন্ময় পাঁজা। তাঁর কথায়, “তদন্ত কমিটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করার পরেই যা বলার বলব।”
গত ২৫ অক্টোবর সন্ধে সাড়ে ৬টা নাগাদ মেদিনীপুর শহরের নতুনবাজারের বাসিন্দা অঙ্কিতা মাইতিকে সাপে ছোবল মারে। মৃতের পরিজনেদের দাবি, মিনিট পনেরোর মধ্যে অঙ্কিতাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জরুরি বিভাগ থেকে ওয়ার্ডে পাঠানো হলেও কোনও চিকিৎসা করা হয়নি। গোপালবাবুর অভিযোগ, “মেয়ের সুষ্ঠু চিকিৎসার দাবি জানানোয় আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ওয়ার্ড থেকে বের করে দেওয়া হয়!”
অভিযোগ, রাতে রোগীকে ‘রেফার’ করার কথা জানালেও চিকিৎসকরা রেফার করেননি। পরদিন সকালে মৃত মেয়েকে ‘রেফার’ করা হয় বলে অভিযোগ। এ দিন তদন্ত কমিটির তিন সদস্য ইউবি রায়চৌধুরী, তারাপদ ঘোষ ও রামনারায়ণ মাইতির কাছে এই দাবি জানানোর পর তদন্ত কমিটি আরও একটি লিখিত অভিযোগ পেশ করতে বলেছেন মৃতের বাবাকে। গোপালবাবু বলেন, “শীঘ্রই লিখিত অভিযোগ জানাব। সে দিন অভিযুক্ত চিকিৎসকদেরও আমার সামনে হাজির করা হবে তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন। আমি অভিযুক্ত চিকিৎসকদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিও জানাব। যাতে আমার মেয়ের মতো অন্য কাউকে এ ভাবে বিনা চিকিৎসায় না মরতে হয়।”