ঘেরাটোপে: ঝাড়গ্রাম শহরে আদিবাসী যুবনেতা প্রবীর মুর্মুর বাড়ির সামনে মোতায়েন হয়েছে পুলিশ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
আরও স্পষ্ট হল বিভাজন রেখা। আলাদা সভার পরে এ বার পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করলেন জঙ্গলমহলে আদিবাসী সংগঠনের দুই শিবিরের নেতারা।
শনিবার বেলপাহাড়িতে সম্মেলনের মাধ্যমে আদিবাসী যুব নেতা প্রবীর মুর্মু গঠন করলেন ‘ভারত দিশম মাঝি মাডওয়া’ নামে নতুন একটি সংগঠন। রাজ্য সরকারের উন্নয়নের পাশে থেকে জঙ্গলমহলের আদিবাসীদের সার্বিক উন্নতির জন্য সরকারের কাছে আবেদন-নিবেদন চলবে বলে জানালেন প্রবীর।
উল্টো দিকে জঙ্গলমহলকে সংবিধানের পঞ্চম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন শানানো শুরু করলেন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর নেতৃত্ব। এই দাবিতে রাজ্যপালকে স্মারকলিপি দিয়ে আন্দোলন শুরু করার ইঙ্গিত দিয়েছেন মাঝি পারগানা মহলের সর্বোচ্চ সর্বভারতীয় প্রধান (দিশম পারগানা) নিত্যানন্দ হেমব্রম। প্রবীররাও জঙ্গলমহলকে সংবিধানের পঞ্চম তফসিল ভুক্ত করা উচিত বলে মনে করেন। তবে এই দাবিতে এখনই তাঁরা রাস্তায় নামতে নারাজ।
শনিবারই নিত্যানন্দরা অভিযোগ করেছিলেন, শাসক দল ও প্রশাসন আদিবাসী সমাজের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে। বস্তুত, বেলপাহাড়ি স্কুল মাঠে জুয়ান গাঁওতার নেতা প্রবীরের কর্মসূচি সফল করার জন্য পুলিশের চেষ্টার খামতি ছিল না। আদিবাসীদের চিরাচরিত সবুজ-হলুদ রঙের বদলে সরকারি নীল-সাদা রঙে সেজেছিল মঞ্চ। সেখান থেকেই নতুন সংগঠনের নাম ঘোষণা করেন প্রবীর। জানিয়ে দেন, আদিবাসী সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তাঁরা কাজ করবেন। প্রবীরদের নতুন সংগঠনকে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছেন না নিত্যানন্দ।
ঝাড়গ্রামে দলের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় শনিবার জানিয়েছিলেন, আদিবাসীদের মধ্যে বিভাজনের কোনও ব্যাপারই নেই। তবে এ প্রসঙ্গে শাসকদলকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। সিপিএমের প্রবীণ নেতা ডহরেশ্বর সেন বলেন, “পাহাড়ের মতো জঙ্গলমহলেও শাসকদল প্রভাব খাটিয়ে আদিবাসী সমাজের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছে। কিন্তু এটা বুমেরাং হয়ে যাবে।’’ বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর কথায়, “আদিবাসীদের ন্যায্য দাবিগুলি থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে তৃণমূল বিপজ্জনক খেলা শুরু করেছে। আমরা এই বিভাজন হতে দেব না।”