প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য অধিকাংশ বাস তুলে নেওয়ায় সোমবার দিনভর দেখা গিয়েছে এমনই দৃশ্য। তমলুক-ময়না সড়কে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস
সপ্তাহের প্রথম কমর্ব্যস্ত দিনেই কাজে বেরিয়ে বাস না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হলেন মানুষজন। কারণ, মেদিনীপুর শহরে সোমবার প্রধানমন্ত্রী জনসভা।
গত কয়েকদিন ধরেই প্রধানমন্ত্রী সভার জন্য নাগাড়ে প্রচার চলেছে মহকুমায়। সভায় যাওয়ার জন্য বিজেপির তরফে আহ্বানও জানানো হয়। কিন্তু তার জেরে এমন ভোগান্তির মুখে পড়েত হবে বলে ভাবনে পারেননি মানুষ। কারণ সভায় দলের নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে যাওয়ার জন্য অধিকাংশ বাসই বুক করেছিল বিজেপি।
সকাল থেকেই বাসের আশায় বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে লোকজনকে। যত বেলা গড়িয়েছে, ততই বেড়েছে অপেক্ষার ভিড়। লোকাল বা দূরপাল্লার প্রায় কোনও বাসই না পেয়ে হয়রান হতে হয় মানুষকে। বাধ্য হয়ে অনেকে শরণাপন্ন হন টোটো, অটো, পুলকারের। কিন্তু এক সময় তাও প্রয়োজনের তুলনায় কম পড়তে দেখা যায়। অনেকে রোজকার তুলনায় দ্বিগুণ ভাড়ায় অটো, ট্ট্রেকার বুক করে গন্তব্যে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করেন। ভোগান্তিতে পড়ে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও। টোটো বা অটো না পেয়ে অনেক ছাত্রছাত্রীকে হেঁটেই স্কুলে যেতে দেখা গিয়েছে।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এগরা-বাজকুল, এগরা-কাঁথি কিংবা এগরা-ডেবরা রুটে প্রতিদিন গড়ে ৭৫টি দূরপাল্লার বাস চলাচল করে। ট্রেকার চলে ১০০টি। সেই জায়গায় সোমবার এগরা-বাজকুল-কাঁথি এবং ডেবরা রুটে মাত্র ১৬টি বাস চলেছে। ট্রেকার চলছে মাত্র ৩৬টি। সপ্তাহের প্রথম দিন কাজে বেরিয়ে বাস না পেয়ে নাস্তানাবুদ হতে হয় স্কুলপড়ুয়া থেকে নিত্যযাত্রীদের। এগরা থেকে বেলদা যাওয়ার জন্য এগরা বাসস্ট্যান্ডে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়েও বাস না পেয়ে হরিপদ সামন্ত ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘এগরায় আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিলাম। বাড়িতে জরুরি কাজ থাকায় ফিরব বলে বাসের জন্য ঘণ্টাখানেক ধরে অপেক্ষায়। বাস নেই। শুনলাম প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য অনেক বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা মানুষের পাশে থাকার কথা বলেন। অথচ তাঁরাই মানুষকে সমস্যায় ফেলেন।’’ পটাশপুর স্কুলের এক শিক্ষক জানান, ‘‘প্রতিদিন বাসেই স্কুলে যাই। এদিন সন্দেহ ছিল বাস পাব কি না। তাই বাইক নিয়ে বেরিয়েছিলাম। দেখলাম সন্দেহটাই ঠিক।’’
এগরা পরিবহণ ইউনিয়নের সভাপতি চন্দ্রশেখর রায় বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য অধিকাংশ বাস ভাড়া নিয়েছে বিজেপি। বাস মালিকেরাও বেশি ভাড়ার আশার বাস ভাড়া দিয়েছেন। ফলে রাস্তায় বাস নেই। তবে তার মধ্যেও অটো-টোটো, পুলকার নামিয়ে মানুষের যাতায়াতের ব্যবস্থা সচল রাখতে চেষ্টা করেছি।’’