বারাণসী-হলদিয়া জলপথ নিয়ে শঙ্কা মৎস্যজীবীদের

দেশের জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থার গুরুত্ব বাড়াতে কেন্দ্র ও রাজ্য যখন যৌথ ভাবে উদ্যোগী হচ্ছে, তখন হলদিয়া-বারাণসী জলপথ পরিবহণ নিয়ে জীবিকা হারানোর দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন পূর্ব মেদিনীপুরের মৎস্যজীবীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:১০
Share:

— ফাইল চিত্র।

দেশের জলপথ পরিবহণে যুক্ত হল হলদিয়া ও বারাণসী। সোমবার উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

দেশের জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থার গুরুত্ব বাড়াতে কেন্দ্র ও রাজ্য যখন যৌথ ভাবে উদ্যোগী হচ্ছে, তখন হলদিয়া-বারাণসী জলপথ পরিবহণ নিয়ে জীবিকা হারানোর দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন পূর্ব মেদিনীপুরের মৎস্যজীবীরা। প্রকল্প ঘোষণার পর থেকেই দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকার-সহ অভ্যন্তরীণ জলপথ বিভাগে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই প্রকল্প চালু হওয়ায় দুশ্চিন্তা আরও বাড়ল বলে দাবি স্থানীয় মৎস্যজীবীদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুতাহাটা ব্লকে ১৩টি ও নন্দীগ্রামে একাধিক মৎস্যখটি রয়েছে। এখানকার মৎস্যজীবীরা মূলত সমুদ্র এবং নদীতে বছরভর মাছ ধরে জীবন ধারণ করেন। তাঁদের দাবি, নদীপথে জাহাজ ও ভেসেল চলাচল করলে মাছ ধরার জাল ছিঁড়ে যাবে। সঙ্কটে পড়বে তাঁদের জীবিকা। শুধু তাই নয়, হলদিয়া থেকে বারাণসী পর্যন্ত অন্তর্দেশীয় জলপথ ব্যবহারে নদীর জল দূষণের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এর ফলে, ইলিশ-সহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের আমদানিতেও টান পড়তে পারে।

Advertisement

দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের নেতা দেবাশিস শ্যামল জানিয়েছেন- ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক মৎস্যজীবীদের স্বার্থ যাতে সুরক্ষিত থাকে সে জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দায়িত্ব থাকা উচিত। কিন্তু বারাণসী-হলদিয়া জলপথে পণ্য পরিবহণ শুরু হলে নানা সমস্যা হতে পারে। তাই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের উচিত ছিল এই অঞ্চলের মৎস্যজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করা। যদিও এ ব্যাপারে তাঁদের দাবি মানা হয়নি বলে অভিযোগ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের।

যদিও, অভ্যন্তরীণ জলপথ বিভাগের যুক্তি চিন, জাপান এবং ইউরোপের দেশগুলিতে পণ্য পরিবহণে জলপথ অধিক ব্যবহার করা হয়। ভারতে জলপথে পণ্য পরিবহণের পরিমাণ খুবই কম। তা ছাড়া, জলপথে পণ্য পরিবহণ বাড়লে দেশে সড়ক ও রেল পরিবহণের তুলনায় দূষণ অনেকটা কমবে। নদী কিংবা সমুদ্রের একটি নির্দিষ্ট চ্যানেল দিয়ে জাহাজ চলাচল করে। ফলে মাছ উৎপাদন এবং মৎস্যজীবীদের জীবিকা নিয়ে আশঙ্কা করার মতো কিছু নেই।

ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটির ডিরেক্টর ক্যাপ্টেন জে জে বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘দেশের সার্বিক সমৃদ্ধির জন্য পণ্য পরিবহণে জলপথের ব্যবহার আরও বাড়ানো উচিত। তবেই দূষণমুক্ত দেশ গড়া যাবে। প্রচুর কর্মসংস্থানও তৈরি হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন