খেলার একটি মুহূর্ত।—নিজস্ব চিত্র।
আইএফএ-র আন্তঃজেলা সাব জুনিয়র ফুটবল প্রতিযোগিতায় জোন চ্যাম্পিয়ন হল হুগলি। মেদিনীপুর অরবিন্দ স্টেডিয়ামে রবিবার ছিল ফাইনাল। ১-০ গোলে উত্তর চব্বিশ পরগনাকে হারিয়ে জিতে যায় হুগলি।
এ দিন প্রচুর গোলের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। হুগলি অন্তত হাফ ডজন গোলে জিততে পারত। তবে সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে না পারায় তা হয়নি। ফাইনালে মাত্র একটা গোল হওয়ায় আক্ষেপ ছিল মাঠেও। খেলা দেখতে মাঠে এসেছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক সুশান্ত চক্রবর্তী, মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত প্রমুখ। আরও গোলের দরজা খোলা উচিত ছিল বলে মানছেন দু’দলের কোচও। জোন চ্যাম্পিয়ন দল হুগলির কোচ দেবু বিশ্বাস বলছেন, “ছেলেরা ভাল খেলেছে। তবে আরও গোল হতে পারত। বিশেষ করে সুযোগ যেখানে তৈরি হয়েছিল। বেশ কিছু সহজ সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে।’’ রানার্স উত্তর চব্বিশ পরগনার কোচ বুদ্ধদেব মণ্ডলের কথায়, “একজন ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। গতকালই তাকে বাড়ি পাঠাতে হয়েছে। তাছাড়া, আমাদের দশজন খেলেছে। তা-ও ছেলেরা চেষ্টা করেছে।’’ সার্টিফিকেট সমস্যার জন্য এ দিন পুরো দল মাঠে নামাতে পারেনি উত্তর চব্বিশ পরগনা। পরপর ছ’বছর অবশ্য উত্তর চব্বিশ গরগনাই সাব জুনিয়রে চ্যাম্পিয়ন ছিল।
প্রতিযোগিতায় দুই মেদিনীপুরের জেলা দল যোগ দিলেও তারা বেশি দূর এগোতে পারেনি। সেকেন্ড রাউন্ডেই তারা বিদায় নেয়। এ দিন রবিবার, ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও ফাইনাল খেলা দেখতে মাঠে ভিড় বিশেষ হয়নি। এমনিতেই খেলাধুলোর প্রতি আগ্রহ কমছে। বড় মাপের খেলা না হলে দর্শকাসন ভরে না। এ দিন যেমন মাঠে পাঁচশো লোকও ছিল না। এ প্রসঙ্গে জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক বিদ্যুৎ বসুর ব্যাখ্যা, ‘জুনিয়র লেভেলের খেলায় ভিড় বিশেষ হয় না। তার উপর মেদিনীপুরের দল ফাইনালে না ওঠায় কেউই বিশেষ মাঠমুখো হয়নি।’’
গত ৭ অগস্ট থেকে মেদিনীপুরে শুরু হয়েছিল আইএফএ র আন্তঃ জেলা সাব জুনিয়র ফুটবল প্রতিযোগিতা। সব মিলিয়ে ১০টি দল যোগ দেয়। হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, চন্দননগর, উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুর। উত্তরবঙ্গের খেলা হবে শিলিগুড়িতে। দুই জোন চ্যাম্পিয়নকে নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের ফাইনালও শিলিগুড়িতে হওয়ার কথা। প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (আইএফএ) ও ওয়েস্ট বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে। মেদিনীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস কাউন্সিলের সহযোগিতায়। অতিরিক্ত জেলাশাসক সুশান্তবাবু বলেন, “মেদিনীপুরে সুষ্ঠু ভাবে সাব জুনিয়র ফুটবল প্রতিযোগিতা হল। আমরা চাই, এ বার সিনিয়র প্রতিযোগিতাও এখানে হোক। আইএফএ এখানে সিনিয়র ফুটবল প্রতিযোগিতা করালে আমরা সব রকম ভাবে সহযোগিতা করব।’’ আইএফএ- কর্তারা জানান, চলতি মরসুমে কোন খেলা কোথায় হবে, তা ঠিক হয়ে গিয়েছে। আগামী দিনে মেদিনীপুরে সিনিয়র ফুটবল প্রতিযোগিতা করানোর প্রস্তাব ভেবে দেখা হবে। পুরো প্রতিযোগিতা না হোক, অন্তত দু’- তিনটি খেলা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। মেদিনীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বিনয় দাস মাল বলেন, “সিনিয়র ফুটবল হলে উত্সাহ-উদ্দীপনা বাড়বে।’’
এ দিন গোড়া থেকেই খেলার রাশ দখলে রেখেছিল হুগলি। উত্তর চব্বিশ পরগনার ডিফেন্ডাররা ভাল খেলেছে। বিশেষ করে গোলকিপার সুরেন্দ্র শর্মা। অন্তত দু’টি নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে তিনিই সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন।