গ্রামবাসীর বাধায় বারবার ব্যাহত হচ্ছে হাতি তাড়ানোর অভিযান। তাই এ বার পরিকল্পনা বদলের সিদ্ধান্ত নিল বন দফতর।
রবিবার বিকেলে শালবনির ভাউদি গ্রামে হাতি তাড়াতে অভিযান শুরু করে হুলা পার্টি। যদিও গ্রামবাসীর বাধায় আটকে যায় অভিযান। হুলা পার্টির লোকেদের মারধরের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। বন দফতরের মনিটরিং কমিটির সদস্যরা এলাকায় গিয়ে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। ফের শুরু হয় অভিযান। ভাউদির পর খসলা, যাত্রা গ্রামেও পথ আটকায় স্থানীয়রা। গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে হাতির দলকে তমাল নদী পার করানো হয়। হাতির দল পৌঁছয় বিষ্ণুপুর গ্রামে। বিষ্ণুপুর গ্রামের কয়েকশো লোক হুলা নিয়ে ফের হাতির পথ আটকানোয় অভিযান ব্যাহত হয়।
শালবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ, বিডিও, এডিএফও বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দাদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে বিষ্ণুপুরেই অভিযান বন্ধ রাখা হয়। সোমবার সকালে ফের হাতিগুলো ফিরে এসে মিরগা বিটের ধানঘোরি ও বাগালডোবার জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। নেপালবাবু বলেন, ‘‘হাতির দলকে বিষ্ণুপুর গ্রাম পার করে দিতে পারলে ভাল হত। পড়ামারা জঙ্গল হয়ে হাতির দল হুমগড়ের হদহদির জঙ্গলে চলে যেত।’’
হুলা পার্টির সদস্য মধুসূদন মাহাতোর অভিযোগ, ‘‘গ্রামবাবাসীর বাধায় বারবার চেষ্টা করেও হাতিগুলিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘হাতির রাস্তা আটকে গ্রামবাসীরা নিজেদেরই ক্ষতি করছেন। কারণ হাতির দল যখন জমির উপর দিয়ে যায়, তখন একের পেছন এক লাইন দিয়ে যায়। ফলে ক্ষতি কম হয়। বাধা পেলেই হাতিগুলি ছড়িয়ে গিয়ে বেশি এলাকার ফসল নষ্ট করে।’’
বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রবিবার সকালে গ্রামবাসীর সঙ্গে আলোচনা করে অভিযান শুরু হয়। তারপরেও স্থানীয়রা বাধা দেওয়ায় অভিযান ব্যাহত হয়। ফলে সোমবার সকালে হাতি ফের পুরনো জায়গায় ফিরে গিয়েছে। একই জায়গায় বেশি দিন হাতি থাকলে ক্ষতি বাড়ছে।’’
পরিস্থিতি দেখে হাতির অভিযানের পথ বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দফতর। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, ‘‘গ্রামবাসীর সঙ্গে আলোচনা করেও ফল মেলেনি। সকলের সহযোগিতা পেলে হাতির দলগুলিকে হুমগড়ের জঙ্গল, গড়বেতা হয়ে বাঁকুড়ায় পাঠিয়ে দেওয়া যেত। এ বার পথ বদলে মঙ্গলবার বিকেল থেকে রঞ্জা, কাঁটাপাহাড়ির জঙ্গল হয়ে বাঁশপাহাড়ির দিকে অভিযান শুরু হবে।’’