জঙ্গলে দলের সঙ্গে খুদের হাতি। —নিজস্ব চিত্র।
জঙ্গলমহলে যেন সংসার পেতেছে হাতি। গত কয়েক মাসে ‘নতুন অতিথি’-র আগমনও হয়েছে।
তাতে খুশি বন দফতর। আবার হাতির সংসারে ‘নতুন অতিথি’ চিন্তারও কারণ। সঙ্গে শাবক থাকলে যে হাতির দল দ্রুত এলাকা ছাড়ে না। আবার দলগুলো এক এলাকায় থেকে যাওয়া মানেই ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে চলা। হস্তি শাবকের সংখ্যা গুনতেও হিমশিম খাচ্ছে বন দফতর। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহার স্বীকারোক্তি, ‘‘হাতির দলে বেশ কয়েকটি শাবক রয়েছে। ঠিক কতগুলো রয়েছে তা জানার সব রকম চেষ্টা চলছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অনেক শাবক পায়ে পায়ে জড়িয়ে থাকছে। ফলে গোনার ক্ষেত্রে খানিক সমস্যাই হচ্ছে।’’
প্রাথমিক ভাবে বন দফতরের এক সূত্র জানাচ্ছে, শাবকের সংখ্যা ৩০-৩৫ হতে পারে। গত কয়েক মাসের মধ্যেই শাবকগুলোর জন্ম হয়েছে। এই মুহূর্তে হাতির তিনটি বড় দল রয়েছে মেদিনীপুর গ্রামীণ, শালবনিতে। ভাদুলিয়া, গুড়গুড়িপাল, নোনাশোল, কালীবাসা, জয়নারায়ণপুর প্রভৃতি এলাকায় ঘোরাঘুরি করছে দাঁতালেরা। একটি দলে ৬৫-৭০টি হাতি রয়েছে। আরেকটি দলে ২২- ২৫টি হাতি রয়েছে। অন্য দলে ৩০-৩৫টি হাতি রয়েছে।
দলে শাবক থাকায় হাতির দল ধীরে ধীরে এলাকা বদলাচ্ছে। তাড়া খেলেও তাড়াহুড়ো করছে না। মায়েরা সন্তানদের আগলে রেখেছে। মেদিনীপুরের এক বনকর্মী মানছেন, ‘‘অনেক শাবককেই মায়ের সঙ্গে খুনসুটি করতে দেখা যাচ্ছে। মায়েরা যেন কড়া নজরে রেখেছে সন্তানদের।’’ মেদিনীপুরের এক বনকর্তা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সঙ্গে শাবক থাকলে হাতির দল কখনও নিচু এলাকার দিকে যাবে না। অথচ, জঙ্গলমহলে হাতির স্বাভাবিক গতিপথের মধ্যে অনেক নিচু এলাকা রয়েছে। ফলে, হাতির দল সন্তানের ভালর কথা ভেবে এই সব এলাকায় এসে থমকাচ্ছে। বিকল্প পথের খোঁজ করছে। মেদিনীপুরের এক বনকর্তার কথায়, ‘‘এখানে পরিবেশের উন্নতি হয়েছে। খাদ্যের জোগান রয়েছে। তাই হাতি থেকে যাচ্ছে।’’