Coronavirus

আক্রান্ত বিদায়ী উপ পুরপ্রধান

প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই রিপোর্ট আসে। সোমবার খড়্গপুর পুরসভার এক বৈঠকেও হাজির ছিলেন হানিফ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২০ ০৪:৫৭
Share:

ঘেরা হয়েছে উপ-পুরপ্রধানের বাড়ির এলাকা। নিজস্ব চিত্র

দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকার ‘তবলিগ-ই-জামাত’ ফেরত ইন্দোনেশীয় মৌলবিরা তাঁর এলাকায় ঘুরে বেরিয়েছিল। মাস্ক ছাড়া শহরে ঘোরার অভিযোগও ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। দিন সাতেক আগে জ্বরের উপসর্গ নিয়েও রাস্তায় বেরিয়েছিলেন তিনি। সেই শেখ হানিফ এবার করোনা আক্রান্ত হলেন। খড়্গপুরের বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান এবং বর্তমান পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য হানিফ পজ়িটিভ হওয়ায় আতঙ্ক বেড়েছে রেলশহরে।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই রিপোর্ট আসে। সোমবার খড়্গপুর পুরসভার এক বৈঠকেও হাজির ছিলেন হানিফ। তাঁর সংস্পর্শে আসায় গৃহ পর্যবেক্ষণে গিয়েছেন শহরের বিধায়ক, মহকুমাশাসক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও কয়েকজন বিদায়ী কাউন্সিলর। গলা ব্যাথা ও কাশির মতো উপসর্গ থাকায় আজ, বৃহস্পতিবার লালারসের নমুনা দেবেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ। বাকিদের নমুনা রবিবার নেওয়া হবে। বুধবারই শেখ হানিফকে শালবনির কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁর স্ত্রী, পুত্র-সহ পরিবারের ৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পাঁচবেড়িয়া ও বামনিআড়া এলাকা গণ্ডিবদ্ধ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আক্রান্ত হওয়ার পরে হানিফ মানছেন, ‘‘একটা শিক্ষা হল। মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় মাস্ক পরা বা সামাজিক দূরত্ব মানার কথা খেয়াল থাকে না। কিন্তু এ বার সচেতন হতে হবে।”

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, খড়্গপুরে এখনও পর্যন্ত শহরে প্রায় ২৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। পাঁচবেড়িয়া সংলগ্ন এলাকায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেশি। তাই গত ২১ জুন সেখানে অভিযান চালিয়ে শেখ হানিফ-সহ ৫৫ জনের নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল। তার মধ্যে ১১ জনের রিপোর্ট প্রথমে অমীমাংসিত এসেছিল। মঙ্গলবার রাতে সেগুলির পুরো রিপোর্ট আসে। সেখানে হানিফ ছাড়াও পাঁচবেড়িয়ার আরও দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন।

Advertisement

খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় জানান, নমুনা সংগ্রহে ৫৫ জনের মধ্যে ৩ জনের পজ়িটিভ। অর্থাৎ নমুনার প্রায় ৬ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছেন। সেই হিসেবে পাঁচবেড়িয়ায় যদি ২০ হাজার মানুষ থাকেন তবে ১২০০ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “যাঁরা শেখ হানিফ-সহ তিনজনের সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁরা হোম আইসোলেশনে থাকবেন। আমিও আছি। সকলের নিয়ম মেনে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।”

বুধবারই করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ফলতার তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষের। তাই হানিফের পজ়িটিভ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়েছে মহকুমা ও পুর প্রশাসনে। মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “সকলকে আরও সচেতন হতেই হবে।” একই কথা মনে করিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “নিজের জন্য নয়, বাড়ির মানুষদের সুরক্ষিত রাখতেই আরও সচেতন হতে হবে।” বিধায়ক তথা পুর-প্রশাসক প্রদীপ সরকার মানছেন, ‘‘জনগণের কাজ করতে গিয়ে সবসময়ে মুখে মাস্ক থাকে না। কিন্তু এই ঘটনা আমাদের একটা শিক্ষা দিল। আমি সচেতন হয়ে নিজেই গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছি।” তবে সোমবার পুরসভার বৈঠকে থাকলেও বিদায়ী কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডে গৃহ পর্যবেক্ষণে যেতে নারাজ। মঙ্গলবার বিধায়ক কার্যালয়ে প্রদীপের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি। তিনিও আপাতত গৃহ পর্যবেক্ষণে যাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন