মেজাজ: বেলিয়াবেড়ার বাজনাগুড়িতে সেগুন বাগানে পর্যটকরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
আরে! সিকিম না কি?
মোটেই না! ওটা বেলপাহাড়ির গা়ডরাসিনি পাহাড়। ঘিরে রয়েছে মেঘের চাদর।
সকাল থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি আর কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। তবে সে সব উপেক্ষা করেই ‘উইক-এন্ড ট্যুর’ জমে উঠল ঝাড়গ্রামে।
বেশির ভাগ স্কুলে শেষ হয়ে গিয়েছে বার্ষিক পরীক্ষা। ফলে শনি ও রবিবারে প্রচুর পর্যটক আসছেন ঝাড়গ্রামে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা অগ্রিম বুকিং হয়ে গিয়েছে সরকারি অতিথিশালায়। একই রকম ভিড় বেসরকারি লজ ও হোটেলেও। কিন্তু গত শুক্রবার থেকে হঠাৎই আকাশের মুখ ভার। শনিবার সারা দিনই কখনও ঝেঁপে, কখনও ঝিরঝরে বৃষ্টি হয়েছে। রবিবারও দিনভর আকাশ ছিল মেঘলা। তবে এই আবহাওয়াতেও পর্যটন ব্যবসায়ী ও হোটেল মালিকদের চিন্তা দূর করে দিয়েছেন পর্যটকেরা। বৃষ্টির মধ্যেই বেড়ানোর আনন্দ পুরোপুরি চুটিয়ে উপভোগ করছেন ইন্দ্রজিৎ হাজরা, হর্ষিত পাল, বন্দনা হাজরা-রা।
একটি বেসরকারি পর্যটন সংস্থার কর্তা সুমিত দত্ত কথায়, “উইক-এন্ডে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় চিন্তায় পড়েছিলাম। কিন্তু বৃষ্টি হলেও আবহাওয়া এত মনোরম, যে পর্যটকরা খুব আনন্দ করে বেড়াচ্ছেন।” বেলপাহাড়ির গাডরাসিনি, ময়ূরঝর্না, ঢাঙ্গিকুসুমের মতো পাহাড়ি এলাকাগুলিতে শনি ও রবিবার বেড়াতে যাওয়ার ধুম পড়ে গিয়েছে। এ ছাড়াও বেলিয়াবেড়া, গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রামেও বিভিন্ন দ্রষ্টব্য এলাকায় যাচ্ছেন পর্যটকেরা। আদিবাসী গ্রামে গিয়ে ‘ফায়ার ক্যাম্প’ করে আদিবাসী লোকনৃত্য দেখার সুযোগ মিলছে, জানান সুমিতবাবু। জঙ্গলঘেরা পিয়ালগেড়িয়া গ্রামের আদিবাসী লোকনৃত্য দলের বাসন্তী মুর্মু জানান, মেঘলা দিনেও পর্যটকেরা নাচ দেখতে ভিড় করছেন।
আর এক সংস্থার কর্তা দেবযানী কর্মকার বলেন, “বৃষ্টি হলেও গত দু’দিনে ভাল পর্যটক এসেছেন। তাঁদের উত্সাহেও খামতি নেই। এমনকী, তাঁদের দাবি মেনে বৃষ্টির মধ্যেও শনিবার সন্ধ্যায় গড়শালবনি এলাকায় আদিবাসীদের নৃত্যানুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।” পর্যটন দফতরের রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সের ম্যানেজার নিমাইকুমার ঘটক বলেন, “প্রচুর পর্যটকরা আসছেন। ১৫ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত আমাদের কোনও ঘর খালি নেই।”
ভিড়, উৎসাহের ছবিটা আরও স্পষ্ট হয় ঝাড়গ্রামের এক বেসরকারি অতিথিশালার মালিক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায়ের কথায়। অগ্রিম বুকিংয়ের জন্য ফোন এলেই তাঁর সাফ জবাব, “২০ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ঘর চেয়ে লজ্জা দেবেন না!”