Keshiary Gilrl Death Case

‘জেঠু’র কাছে ধর্ষিত হয়ে লজ্জা ও ভয়ে বিষপান! পশ্চিম মেদিনীপুরের হাসপাতালে মৃত্যু ১৫-র কিশোরীর

প্রথমে ধৃতের পুলিশি হেফাজত এবং পরে জেল হেফাজত হয়। এর মধ্যে গত ২৪ অক্টোবর বাড়িতে রাখা কীটনাশক পান করে। ১৮ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিল। মঙ্গলবার মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৫ ১১:০৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

প্রতিবেশীর কাছে ধর্ষিত হয়ে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করল এক কিশোরী। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি থানা এলাকায়। আগেই ‘ধর্ষক’কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার জন্য তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে মৃতার পরিবার।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার বয়স ১৫ বছর। তাকে ধর্ষণের অভিযোগে যাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁর বয়স ৪০। চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর কেশিয়াড়ি থানায় নাবালিকার জেঠু লিখিত অভিযোগ করেন। তাতে বলা হয়, ওই থানা এলাকার এক চানাচুর ব্যবসায়ীর কারখানায় মাঝেমধ্যে কাজ করতে যেত তাঁর কিশোরী ভাইঝি। সেই ব্যবসায়ীর বাড়ি তাঁদের বাড়ির কাছেই। ব্যবসায়ীকে ‘জেঠু’ বলে ডাকত নাবালিকা। মাঝেমধ্যে ওই জেঠুর বাইকে চেপেই কারখানায় যেত সে।

গত অগস্টের শেষে কারখানায় নিয়ে যাওয়ার নাম করে নাবালিকাকে কাছের একটি জঙ্গলে নিয়ে যান ‘জেঠু।’ ধর্ষণ করা হয় কিশোরীকে। যৌন নির্যাতনের পরে মেয়েটিকে প্রাণে মেরে ফেলার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। প্রথমে লজ্জা, ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারেনি মেয়েটি। তবে শেষমেশ সাহস করে গত ৯ সেপ্টেম্বর বাড়ির লোকজনকে সব কথা বলে ১৫ বছরের কিশোরী। সে দিন বিকেলেই কেশিয়াড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে নাবালিকার পরিবার। তার ভিত্তিতে পরের দিনই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করে কেশিয়াড়ি থানার পুলিশ। প্রথমে ধৃতের পুলিশ হেফাজত এবং পরে জেল হেফাজত হয়। এর মধ্যে গত ২৪ অক্টোবর বাড়িতে রাখা কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ‘নির্যাতিতা।’ তাকে কেশিয়াড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেই থেকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল মেয়েটির। প্রায় ১৮ দিনের যুদ্ধশেষে মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে তার।

Advertisement

মঙ্গলবারই কিশোরীর দেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। সন্ধ্যায় বাড়িতে তার দেহ পৌঁছোয়। মৃতার জেঠুর দাবি, ‘‘ওই ঘটনার পর থেকেই বড্ড চুপচাপ হয়ে গিয়েছিল ও। পরে সাহস করে সব জানিয়েছিল আমাদের। আমি পুলিশের কাছে যাই। পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। ওর মন ভাল করার জন্য আমাদের বাড়িতেই রেখেছিলাম। আসতে আসতে স্বাভাবিকও হচ্ছিল। কিন্তু গত ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় আমাদের সকলের অজান্তে কীটনাশক পান করে। মঙ্গলবার সকালে সব শেষ! বাঁচাতে পারলাম না ওকে।’’ হাহাকার করে ওঠেন প্রৌঢ়। তাঁর দাবি, যাঁর জন্য ভাইজি এমন পদক্ষেপ করল, তাঁর যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।

মৃতার পরিবারের অনুমান, থানা-পুলিশ হওয়ার পরে পাড়ার কেউ অথবা অভিযুক্তের পরিবারের কেউ হয়তো নাবালিকাকে অপমানজনক কিছু বলেছেন। সেটাই সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয় সে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে অভিযুক্তকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত এখন জেলে। তদন্ত চলছে। তার মধ্যেই এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে গেল। তদন্তে সব কিছুই খতিয়ে দেখা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement