স্কুলের ভোজে সবুজের বার্তা

এলাকার বিধায়ক দীনেন রায়েরও বক্তব্য, “স্কুলের এই উদ্যোগ সত্যিই অন্য রকম। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও মানব সভ্যতা রক্ষার জন্যই আরও বেশি করে সবুজকে রক্ষা করা জরুরি। স্কুল সেই সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এটা ভাল দিক।’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:০৬
Share:

মেনুকার্ডে গাছ লাগানোর স্লোগান। নিজস্ব চিত্র

গাছ লাগাবো মোরা, সবুজ হবে ধরা— পোস্টার বা প্ল্যাকার্ড নয়, সবুজ রক্ষার এমন বার্তা লেখা মেনুকার্ডে। সঙ্গে পৃথিবী ও গাছের ছবি। স্কুলে সরস্বতী পুজোর প্রীতিভোজে সামিল হওয়া পড়ুয়াদের হাতে হাতে দেওয়া হল এই মেনুকার্ড। উৎসবের মধ্যেও মনে করিয়ে দেওয়া হল সবুজায়নের গুরুদায়িত্ব।

Advertisement

মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাচরার পলাশি প্রাথমিক স্কুলে সরস্বতী পুজোর প্রীতিভোজ ছিল শুক্রবার। পাতপেড়ে খেতে বসে এমন কার্ড হাতে পেয়েছে পড়ুয়ারা। কেন এমন ভাবনা? স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌম্যসুন্দর মহাপাত্র বলছিলেন, “ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যাতে গাছ লাগানোর মানসিকতাটা তৈরি করা যায় সেই জন্যই এমন মেনুকার্ড।’’ তাঁর কথায়, “পুজোর প্রীতিভোজ তো হয়ই। নতুন কিছু করার ইচ্ছে ছিল। একটা বার্তা দিতে চেয়েছিলাম। সেখান থেকেই এই ভাবনা।’’ সরস্বতী পুজোর প্রীতিভোজে এই মেনুকার্ড পেয়ে খুশি পড়ুয়ারা।

খুদেদের বক্তব্য, স্যাররা স্কুলেও গাছ লাগানোর কথা বলেন। কেন গাছ বাঁচিয়ে রাখা জরুরি, মাঝেমধ্যে তা শোনান। এ বার কথাটা কার্ডে ছেপেই দিয়েছেন। বুদ্ধদেব হেমব্রম নামে এক ছাত্র বলছিল, “মেনুকার্ডটা বইয়ের মধ্যে রেখে দেবো। তাহলে অনেক দিন থাকবে। গাছ লাগানোর কথাটাও কখনও ভুলব না।’’ এমন উদ্যোগের প্রশংসা করছেন অভিভাবকেরাও। লক্ষ্মীকান্ত হেমব্রম নামে এক অভিভাবক বলছিলেন, “ছোট কথা। কিন্তু এর মানে অনেক বড়।’’

Advertisement

প্রীতিভোজের মেনুও একটু অন্য রকম ভাবে সাজানোর চেষ্টা হয়েছে। শুরুতে ছিল আলু ভাজা, ফ্রায়েড রাইস, চানা মশলা, বেগুন পোড়া। পরে ভাত, ডাল, আলুপোস্ত, মাংস। শেষ পাতে চাটনি, পাঁপড়, পায়েস, মিষ্টি। স্কুলের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করছেন সকলেই। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহার কথায়, “ভাল উদ্যোগ। আমাদের সকলেরই উচিত, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সবুজকে রক্ষা করা। সবুজ আমাদের সম্পদ। একে রক্ষা করতেই হবে।’’ আর এক বনকর্তার কথায়, “সবুজ কমলে সমাজের ক্ষতি, মানুষের ক্ষতি। কারণ, সেই ক্ষেত্রে আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন হয়।
তা হচ্ছেও। তাই এখন আরও বেশি করে গাছ লাগানোর চেষ্টা হয়। প্রতি বছর নতুন করে অনেক গাছ লাগানোও হয়।’’

এলাকার বিধায়ক দীনেন রায়েরও বক্তব্য, “স্কুলের এই উদ্যোগ সত্যিই অন্য রকম। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও মানব সভ্যতা রক্ষার জন্যই আরও বেশি করে সবুজকে রক্ষা করা জরুরি। স্কুল সেই সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এটা ভাল দিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন