নোটবন্দির সময় সোনায় টাকা বিনিয়োগে প্রতারণার এক পুরনো মামলার সূত্রেই সিআইডি নিশানায় ভারতী ঘোষ। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন এই পুলিশ সুপারের বাড়িতে, তাঁর ছেলের বাড়িতে, ভারতী ‘ঘনিষ্ঠ’ পুলিশ আধিকারিকদের বাড়িতে জোর কদমে তল্লাশি চলছে। সেই সূত্রে দাসপুরের এক সোনার ব্যবসায়ীকে সিআইডি গ্রেফতারও করে ফেলেছে। এই অবস্থায় উদ্বেগের ছবি দাসপুর জুড়ে। ঘুম উড়েছে এলাকার সোনার কারবারিদের।
পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর সোনার কারবারের অন্যতম কেন্দ্র। এখানকার কয়েক হাজার মানুষ স্বর্ণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। এলাকায় সোনার গয়নার ছোটখাটো কারবারের পাশাপাশি মুম্বই, সুরাত, দিল্লিতে সোনার কাজে কারিগর হিসেবে কাজ করেন এলাকার বহু যুবক। ২০১৬-র নভেম্বরে পাঁচশো, হাজারের নোট বাতিলের পরে দাসপুর কেন্দ্রিক এই সোনার কারবার বড়সড় ধাক্কা খায়। সেই সময় ভিন্ রাজ্য থেকে বহু সোনা ব্যবসায়ী ফিরে এসেছিলেন গ্রামের বাড়িতে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, তখনই পুরনো পাঁচশো এবং হাজার টাকা দিয়ে সোনা কেনার হিড়িক পড়েছিল দাসপুর জুড়ে। সোনার দামও চড়েছিল অনেকটা। স্থানীয় সোনা ব্যবসায়ী ও সেই কারবারে যুক্ত বেশ কয়েকজনের দাবি, তখন বাজারে ১০ গ্রাম সোনার দাম ছিল ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু পুরনো টাকায় ১০ গ্রাম সোনার দাম উঠেছিল ৪০-৪৫ হাজার টাকা। বাতিল টাকায় সোনা কেনার সেই কারবারেই সিআইডি-র নজরে এ বার ভারতী ঘোষ।
যাঁর রুজু করা মামলার প্রেক্ষিতে সিআইডি অভিযান, সেই চন্দন মাঝির অভিযোগের ভিত্তিতে বিমল ঘোড়ই নামে দাসপুরের এক সোনা ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারও করেছে সিআইডি। ধৃত এখন সিআইডি হেফাজতে। আর তাই উদ্বিগ্ন দাসপুরের সোনা কারবারিরা। সোনা ব্যবসায়ীদেরই একাংশ জানালেন, কেউ কেউ ওই সময় মোটা টাকা মুনাফা করতে বাজার দরের থেকে অনেক বেশি দামে সোনা লেনদেন করেছেন। যার উদ্দেশ্য ছিল একটাই— বাতিল নোটকে সোনায় বদলে নেওয়া। অভিযোগ, রাজনৈতিক দলের নেতা থেকে পুলিশ সকলেই এতে জড়িত ছিলেন। ফলে, তদন্তের সূত্রে কখন, কে কোপে পড়েন, দাসপুর জুড়ে এখন সেই জল্পনা। এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি সিআইডি কর্তারা। সিআইডির এক আধিকারিকের কথায়, “আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছি। কিন্তু এর বেশি সংবাদমাধ্যমকে বলব না।” আর এক পুলিশ কর্তার মন্তব্য, “সময়েই সব জানতে পারবেন।”