Gold shop

সোনা লুট ! বয়ান বদল দোকানির

পুলিশের দাবি, ওই সোনা দোকানি জানিয়েছিলেন, রাত ৮টা নাগাদ ছিনতাই হয়েছে। অথচ যেখানে ছিনতাই হয়েছে বলে তাঁর দাবি, সেখানে কোনও প্রত্যক্ষদর্শী মেলেনি। ঘটনাস্থলে একটি পাখা মেরামতির দোকান রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৪০
Share:

প্রতীকী চিত্র

আগ্নেয়াস্ত্র বদলে গেল ধারালো অস্ত্রে। ৫০০ গ্রাম সোনা হয়ে গেল ১০ গ্রাম। ৪০ হাজার টাকা কমে হল ৫ হাজার। শুক্রবার রাতে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার মিলিটারি রোডে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছিল। শনিবার সকাল হতেই সেই অভিযোগের বয়ানে নাটকীয় পরিবর্তন দেখা গেল। মিলিটারি রোড বাজারের সোনার দোকানি মদনমোহন মণ্ডল ওই ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে তিনি দাবি করেছিলেন, দোকান বন্ধ করে সাইকেলে করে বাড়ি ফেরার সময়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। দু’টি বাইকে আসা দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তাঁকে মারধর করে সঙ্গে থাকা ৫০০ গ্রাম সোনা, ৭ কিলো রুপো ও ৪০ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট পালিয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। কিন্তু প্রাথমিক তদন্তের পরেই ধরা পড়ে অসঙ্গতি। শনিবার সকালে ডেকে পাঠানো হয় সোনার দোকানিকে। দীর্ঘ জেরায় বদলে যায় অভিযোগের বয়ান। ফলে, তদন্তকারীরা অভিযোগের সত্যতা নিয়েই সংশয়ে পড়েছেন। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “ওই সোনার দোকানির কথায় কিছুটা অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। প্রাথমিকভাবে ছিনতাই বলেই মনে হচ্ছে। অবশ্য আগ্নেয়াস্ত্র ছিল কি না দেখা হচ্ছে।” আদতে দাসপুরের বাসিন্দা মদনমোহন মণ্ডল দীর্ঘ বছর ধরেই মিলিটারি রোডের শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। মিলিটারি বাজার থেকে তাঁর দোকানের দূরত্ব মাত্র তিনশো মিটার। সোনা-রুপোর গয়নার ব্যবসার পাশাপাশি বন্ধকি ব্যবসাও করেন তিনি। যদিও বন্ধকি ব্যবসার কোনও লাইসেন্স নেই বলেই পুলিশের দাবি।
কী ভাবে ধরা পড়ল অসঙ্গতি?

Advertisement

পুলিশের দাবি, ওই সোনা দোকানি জানিয়েছিলেন, রাত ৮টা নাগাদ ছিনতাই হয়েছে। অথচ যেখানে ছিনতাই হয়েছে বলে তাঁর দাবি, সেখানে কোনও প্রত্যক্ষদর্শী মেলেনি। ঘটনাস্থলে একটি পাখা মেরামতির দোকান রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা ছিল। কিন্তু তার দোকানি কিছু দেখতে পাননি বলে জানিয়েছেন। অভিযোগকারী প্রথমে দু’টি বাইকে আসা দুষ্কৃতীরা খড়্গপুরের অভিমুখে ছিল বলে দাবি করেছিলেন। পরে বয়ান বদল করে তিনি জানান, দু’টি বাইক দুই অভিমুখে ছিল। প্রথমে ৫০০ গ্রাম সোনা ছিনতাইয়ের অভিযোগ করলেও তার নথি দেখাতে পারেননি। মাত্র ৫ গ্রাম সোনার নথি দেখিয়েছেন তিনি। এতেই সন্দেহ হয় পুলিশের। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার সকালের জেরায় তিনি মেনেছেন, আসলে ১০ গ্রাম সোনা ছিনতাই হয়েছে। বয়ান বদলে আরও দাবি করেন, শুক্রবার রাত সোনার সঙ্গে ৪০০ গ্রাম রুপো ও ৫ হাজার নগদ টাকা ছিনতাই হয়েছে তাঁর।
বয়ানে বদল কেন? সোনার দোকানি মদনমোহনের দাবি, “আমার মাথার ঠিক ছিল না। ছিনতাইয়ের পরে কী বলতে কী বলেছি মনে করতে পারছি না। ৫০০ গ্রাম নয়, ১০-১৫ গ্রাম সোনা ছিনতাই হয়েছে।” সত্যিই কি আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ছিনতাই হয়েছে? তাঁর উত্তর, “আমাকে ওরা মারছিল বলে ওটা বন্দুক না ছুরি ঠিক বুঝতে পারিনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন