শহরে ঠাঁই চায় সরকারি বাস

সরকারি বাস বেড়েছে। কিন্তু মেদিনীপুরে সরকারি বাসের যে ডিপো রয়েছে তা শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরে। কুইকোটার কাছে সদর ব্লক অফিসের উল্টো দিকে। ফলে, শহরের মধ্যে ঠাঁই হয় না সরকারি বাসগুলোর। ভোগান্তি বাড়ে যাত্রীদের।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৫২
Share:

সরকারি বাস ডিপো এখন রয়েছে মেদিনীপুর শহরের বাইরে সদর ব্লকে। নিজস্ব চিত্র।

সরকারি বাস বেড়েছে। কিন্তু মেদিনীপুরে সরকারি বাসের যে ডিপো রয়েছে তা শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরে। কুইকোটার কাছে সদর ব্লক অফিসের উল্টো দিকে। ফলে, শহরের মধ্যে ঠাঁই হয় না সরকারি বাসগুলোর। ভোগান্তি বাড়ে যাত্রীদের।

Advertisement

পরিষেবায় গতি আনতে এ বার তাই শহরের কেন্দ্রস্থলে বার্জটাউনের পাশে কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড চত্বরে জায়গা চেয়ে মেদিনীপুর পুরসভার কাছে আবেদন করল দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (এসবিএসটিসি)। আবেদন খতিয়ে দেখেছে পুরসভা। পুরসভার এক সূত্রে খবর, ওই সংস্থাকে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে জায়গা দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য দু’টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। জায়গা দু’টি সংস্থার কর্তাদের দেখানো হবে। তারপর তাঁরা যে জায়গাটি চাইবেন, সেটিই দেওয়া হবে। বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ৪০০- ৫০০ বর্গফুট জায়গা চেয়েছিল এসবিএসটিসি। তবে এই জায়গা পুরসভা দিতে পারছে না। স্থির হয়েছে, ৮০-৯০ বর্গফুট জায়গা দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে পুরসভার সঙ্গে এসবিএসটিসি-র এক চুক্তিও হওয়ার কথা। এসবিএসটিসি-র মেদিনীপুর ডিপোর ইন-চার্জ দেবাংশু গিরির বক্তব্য, “যাত্রীদের সুবিধের কথা ভেবেই বাসস্ট্যান্ড চত্বরে জায়গা চাওয়া হয়েছে। ওখানে স্থায়ী টিকিট কাউন্টার, যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে। জায়গা পেলেই কাজ শুরু হবে।’’ এ প্রসঙ্গে মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, ‘‘এসবিএসটিসি-কে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে জায়গা দেওয়া হবে। এখন সরকারি বাসের সংখ্যা বাড়ছে। পরিষেবার মানও উন্নত হচ্ছে। এসবিএসটিসি-র সঙ্গে পুরসভা সব রকম সহযোগিতা করবে।’’

Advertisement

নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এখন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী। পশ্চিম মেদিনীপুরের সঙ্গেও ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানও। ফলে, জেলার সদর শহরে সরকারি বাসের পরিষেবার মানোন্নয়নে একটা বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে বলেই খবর। এখন মেদিনীপুর ডিপো থেকে ২৯টি বাস ছাড়ে। পাশাপাশি ডিপোয় আসা- যাওয়া করে আরও ৯টি বাস। অর্থাৎ, ৩৮টি সরকারি বাস মেদিনীপুর ছুঁয়ে যায়। এক সময় এই সংখ্যাটা ছিল মাত্র ৯, পরে বেড়ে হয় ১৫। এসবিএসটিসি-র এক কর্তা বলেন, ‘‘এখন বাসের সংখ্যা বাড়ছে। নতুন নতুন রুটে বাস চালু হচ্ছে। দিন কয়েক আগেই তো মেদিনীপুর-দিঘা রুটে নতুন বাস চালু হয়েছে।’’

তবে সরকারি বাসের ডিপো শহরের বাইরে গ্রামীণ এলাকায় হওয়ায় যাত্রীরা সমস্যায় পড়েন। টিকিট কাটার জন্য অনেক শহর থেকে কুইকোটার কাছে ডিপোয় ছুটতে হয়। শহরের কেন্দ্রীয় স্ট্যান্ডে একটি টিকিট কাউন্টার রয়েছে। তবে তা সরাসরি এসবিএসটিসি দেখভাল করে না। এজেন্সি দেখভাল করে। এই কাউন্টার কম্পিউটারাইজড না হওয়ায় সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। অম্লান বেরা, সুতপা দাসের মতো যাত্রীদের কথায়, ‘‘মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে এসবিএসটিসি-র স্থায়ী টিকিট কাউন্টার থাকলে সব দিক থেকেই সুবিধে হয়।’’ তা ছাড়া, ডিপো থেকে সরকারি বাস ছেড়ে মেদিনীপুর স্ট্যান্ডে এলেও বেশিক্ষণ দাঁড়ায় না। স্ট্যান্ড ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। তাতেও যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ে।

মেদিনীপুর শহরের বার্জটাউন লাগোয়া কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড ঘিরে যানজট রোজকার সমস্যা। জেলায় প্রতিদিন গড়ে যে ৭৫০টি বাস চলাচল করে, তার বেশিরভাগ বাসই শহর ছুঁয়ে যায়। স্ট্যান্ডের জায়গা অপরিসর হওয়ায় বাস, মিনিবাস, দূরপাল্লার বাস সবই দাঁড়ায় রাস্তায়। শহরের এই অংশের যানজট সামলাতে হিমশিম খায় পুলিশ। পরিস্থিতি দেখে শহর লাগোয়া এলাকায় নতুন বাসস্ট্যান্ড করার পরিকল্পনাও রয়েছে। এক পুর-কর্তা মানছেন, “সদর শহরের চাপ কমাতে নতুন বাসস্ট্যান্ড তৈরি হবে। এ নিয়ে বৈঠকও হয়েছে।’’

পুরসভার দ্বারস্থ এসবিএসটিসি

শহরের মধ্যে নয়, সরকারি বাস ডিপো এখন মেদিনীপুরের বাইরে

টিকিট কাটার জন্য অনেক যাত্রীকে সেখানে যেতে হয়

কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের এজেন্সি চালিত কাউন্টার কম্পিউটার চালিত না হওয়ায় সমস্যা বাড়ে

ডিপো থেকে সরকারি বাস ছেড়ে মেদিনীপুর স্ট্যান্ডে এলেও বেশিক্ষণ দাঁড়ায় না। তাতেও ভোগান্তি বাড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন