—প্রতীকী চিত্র।
বৌমা নাবালিকা। তার প্রথম সন্তানও হল কিনা মেয়ে! রাগে আট দিন বয়সি নাতনির মুখে বিষ ঢেলে দেন ঠাকুমা। এমনই অভিযোগে ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়া থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন এক প্রৌঢ়া। রবিবার তাঁকে ঝাড়গ্রামে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। বিচারক চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশ কিছু দিন আগে গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের বাসিন্দা দুই তরুণ-তরুণী বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন। তখন মেয়েটির বয়স ছিল, তার স্বামী ২১ বছরের। প্রথমে পরিবার ওই যুগলের বিয়ে মানতে চায়নি। পরে অবশ্য শ্বশুরবাড়িতে ঠাঁই হয় ষোড়শীর। তার বাপের বাড়ির অভিযোগ, শ্বশুরবাড়িতে প্রায়শই অপমানিত হতে হত বধূকে। সেই অত্যাচারের মাত্রা ছাড়াল দিন দশেক আগে, যখন মেয়েটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। অভিযোগ, গৃহকর্ত্রী নাতি চেয়েছিলেন। কিন্তু তা না হওয়ায় না মাত্র আট দিনের নাতনির মুখে বিষ দিয়ে দেন তিনি। শনিবার সকালে শিশুর মুখ থেকে গ্যাঁজলা বার হতে দেখে চিৎকার-চেঁচামেচি করে মা। প্রথমে শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্থানীয় হাসপাতালে। কিন্তু তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকায় গোপীবল্লভপুর সু়পার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এখনও সঙ্কট কাটেনি।
এর মধ্যে শিশুর মামাবাড়ির বাড়ির তরফে থানায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঠাকুমাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃতের বিরুদ্ধে বিষ খাওয়ানো এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) ১২৩ এবং ১০৯ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের এসএনসিইউ বিভাগের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শিশুটিকে যখন সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তখন তার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট এবং খিঁচুনি হচ্ছিল। সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘এত বছর চাকরি করছি... এত ছোটো একটি মেয়ের পেটে বিষ মেলার মতো ঘটনা দেখিনি। ওর অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।’’ শিশুর মা চিকিৎসককে জানিয়েছেন, তাঁর শাশুড়িই মেয়ের মুখে বিষ দিয়েছেন।
এ নিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের এক অধিকারিকের মন্তব্য, ‘‘মর্মান্তিক ঘটনা! আমরা তদন্ত শুরু করেছি। শিশুটির ঠাকুমাকে গ্রেফতার করেছি।’’