যুবতীকে খুন, অভিযুক্ত স্বামী

যুবতীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুললেন মৃতের বাপের বাড়ির লোকেরা। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তেমাথানির বাসিন্দা বছর পঁচিশের মৌসুমী ঘোষের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার মৌসুমীর বাবা অসিত ঘোষ সবং থানায় মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩০
Share:

যুবতীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুললেন মৃতের বাপের বাড়ির লোকেরা। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তেমাথানির বাসিন্দা বছর পঁচিশের মৌসুমী ঘোষের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার মৌসুমীর বাবা অসিত ঘোষ সবং থানায় মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের তির মৃতার স্বামী পেশায় ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত ঘোষের দিকে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পরে সবংয়ের বাসিন্দা সুব্রত বছর আটেক আগে গড়বেতার বাসিন্দা মৌসুমীকে বিয়ে করেন। তাঁদের বছর ছ’য়েকের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। ইদানীং তাঁদের পরিবারে অশান্তি বাড়ছিল। শুক্রবার মৃতার পরিবারের দায়ের করা অভিযোগে সেই অশান্তির উল্লেখ রয়েছে। সুব্রতর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলেও অভিযোগে দাবি করেছেন মৃতের বাপের বাড়ির লোকেরা। মৌসুমীর বাপের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, সুব্রতর আগে বিয়ে ছিল বলে তাঁরা জানতেন না। পরে মৌসুমী বিষয়টি জানতে পারে। এর পর থেকে সাংসারিক নানা সমস্যা নিয়ে অশান্তি চলছিলই। সম্প্রতি সুব্রত অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন বলে বাপের বাড়িতে জানায় মৌসুমী। এমনকী হোয়াটস্‌ অ্যাপে ওই মহিলার সঙ্গে সুব্রতকে কথা বলতে দেখে ফেলায় মৌসুমী প্রতিবাদও করেছিলেন। তাই নিয়েই মাস দেড়েক ধরে অশান্তি চরমে পৌঁছেছিল।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বাড়িতে ছিলেন না সুব্রত। নারায়ণগড়ে কাজে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁদের ছেলেও স্কুলে গিয়েছিল। ছেলেকে স্কুল থেকে নিয়ে আসার জন্য মৌসুমীর মোবাইলে ফোন করেন সুব্রত। কিন্তু মৌসুমী ফোন না ধরায় তিনি পড়শিদের বিষয়টি জানান। এরপরে পড়শিরা বাড়ি গিয়ে দেখেন সিলিং ফ্যানে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মৌসুমীর দেহ ঝুলছে। খবর পেয়ে আসেন সুব্রত। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। স্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধারের পরে অসুস্থ হয়ে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন সুব্রত।

Advertisement

পড়শি ও বাপের বাড়ির পরিবার বৃহস্পতিবারই দাবি করে, ঝুলন্ত অবস্থায় মৌসুমীর পা বিছানায় লেগে ছিল। তাই ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে স্থানীয়দের মনে। মৌসুমী আত্মহত্যা করেছেন না কি তাঁকে খুন করা হয়েছে সে বিষয়ে ধন্দে পুলিশও। মৃতার দাদা গড়বেতার বাসিন্দা রামকুমার ঘোষের অভিযোগ, “সুব্রতর যে প্রথম পক্ষের স্ত্রী রয়েছে তা আমরা পরে জেনেছি। অনেক দিন ধরে বোন আর সুব্রতর অশান্তি চলছিল। ইদানীং বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েছিল সুব্রত। আমরা নিশ্চিত সুব্রত আমার বোনকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছিল।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘ছেলেকে স্কুলে পাঠানোর পরেই সুব্রত বোনকে খুন করে অফিস চলে গিয়েছিল। পরে সব নাটক করেছে। বোনের পা বিছানায় লেগেছিল। আমরা খুনির শাস্তি চাই।” ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন