প্রতীকী চিত্র।
গরম পড়তে না পড়তেই শুরু রক্তের সঙ্কট। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এ বার স্বাস্থ্যকেন্দ্র-হাসপাতালে রক্তদান শিবির করার নির্দেশ দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। নির্দেশে জানানো হয়েছে, মাসে অন্তত একটি শিবির করতে হবে। সেই মতো ব্লকে ব্লকে শিবিরের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি মেদিনীপুরে জেলা স্বাস্থ্য ভবনে এক বৈঠক হয়। বৈঠকে রক্তের সমস্যা ও সমাধানের পথ নিয়েই আলোচনা হয়। সমস্যা সমাধানের জন্য ব্লকে ব্লকে শিবির করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। আলোচনায় সেই প্রসঙ্গও ওঠে। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা মনে করছেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র- হাসপাতালে মাসপিছু একটি শিবির হলে সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হবে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা মানছেন, “এ বার হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রক্তদান শিবির হবে। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। শিবির শুরু হলে রক্তের সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে।”
তাঁর স্বীকারোক্তি, “গরমে রক্তদান শিবিরের সংখ্যা কমে। শিবিরের সংখ্যা কমলে সমস্যা হয়। শিবিরের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।”
স্বাস্থ্যকেন্দ্র-হাসপাতালে যে শিবির হবে, সেই শিবিরে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরাও রক্ত দেবেন। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “আমাদের সকলেরই একটা দায়িত্ব রয়েছে। রক্তদান মহৎদান।”
এখন জেলার সব হাসপাতালেই কমবেশি রক্তের সঙ্কট রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে তিনটি ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। সবথেকে বড় ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। খড়্গপুর ও ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালেও ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। অবশ্য মেদিনীপুর ছাড়া বাকি দু’টি জায়গায় রক্তের পৃথকীকরণ ইউনিট (সেপারেশন ইউনিট) নেই। ফলে, রোগীদের ‘হোল ব্লাড’-ই দিতে হয়।
মেদিনীপুরে অবশ্য রোগীদের ‘হোল ব্লাড’ দেওয়া হয় না। সামগ্রিক রক্তের পরিবর্তে রক্তের বিভাজিত অংশ দেওয়া হয়। যেমন, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের লোহিত রক্তকণিতা (আরবিসি), অগ্নিদ্বগ্ধ রোগীদের রক্তরস (প্লাজমা), ডেঙ্গি আক্রান্তদের অনুচক্রিকা (প্লেটলেট)- র মতো রক্তের বিভাজিত অংশ দেওয়া হয়।
হাসপাতালগুলোয় বিভিন্ন কারণে রক্তের প্রয়োজন হয়। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে জখমদের হাসপাতালে আনা হয়। দ্রুত রক্ত না মিললে সমস্যা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় রক্তের প্রয়োজন হয়। খবর, কোন হাসপাতাল-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কবে শিবির হবে তার একটি তালিকা তৈরি হচ্ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রবাবু বলেন, “শিবিরের সংখ্যা বাড়লে নিশ্চিত ভাবেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”