কারও মৃত্যু হলে ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ পেতে প্রায়ই হয়রান হয় মৃতের পরিবার। ছবিটা বদলাতে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা বুধবার মেদিনীপুরে এসে চিকিৎসকদের জানিয়ে দিলেন, এমন হয়রানি আর চলবে না। মৃত্যুর এক ঘণ্টা পরেই ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ দিয়ে দিতে হবে। মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হলে এক ঘন্টার আগেও ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ দেওয়া যেতে পারে।
বুধবার স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে চিকিৎসকদের নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘মেডিক্যাল সার্টিফিকেট অফ কজ অফ ডেথ’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ শিবির হয়। শিবিরে ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। অতনুবাবু বলছিলেন, “তিন ঘণ্টা না পেরোলে ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ দেওয়া যাবে না, এমন কোনও নিয়ম নেই। চিকিৎসকদের এটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুর এক ঘণ্টা পরই ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ দিয়ে দিতে হবে।”
উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথবাবুও বলেন, “তিন ঘণ্টা না পেরোলে ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ দেওয়া যাবে না, কোড অব মেডিক্যাল এথিকস-এ এমন কোনও নিয়মের উল্লেখ নেই।” জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার স্বীকারোক্তি, “এটা প্রথা হিসেবেই চলে আসছে। এ বার এই প্রথা ভাঙতে হবে।”
চিকিৎসকদের একাংশেরও বক্তব্য, হৃদপিণ্ড বন্ধের তিন মিনিট পরে কোষের মৃত্যু শুরু হয়। এরপরই সমস্ত অঙ্গ ঠান্ডা ও শক্ত হতে শুরু করে। চোখের মণি স্থির হয়। এর জন্যই কিছুটা সময় দরকার। কিন্তু তিন ঘণ্টা সময় অনেক বেশি। এর জন্য এক ঘণ্টাই যথেষ্ট। এ দিনের শিবিরে প্রায় ৬০ জন চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম, খড়্গপুরেও এমন শিবির হবে। ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ লেখার ক্ষেত্রে কোন কোন দিকে নজর রাখা জরুরি, তাও চিকিৎসকদের জানানো হয়। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘ঠিক কী রোগে মৃত্যু হয়েছে, কখন মৃত্যু হয়েছে, এ সব ‘ডেথ সার্টিফিকেট’-এ নির্দিষ্ট করে লেখার কথা জানানো হয়।’’