কৃষিমেলায় পাত পেড়ে খিচুড়ি, বরাদ্দ ৩০ হাজার

রাজ্যের নির্দেশ রয়েছে, ২ থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মহকুমা স্তরে কৃষিমেলার আয়োজন করতে হবে। সেখানে প্রদর্শনী হবে। কৃতী কৃষকদের পুরস্কৃতও করা হবে। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, কৃষিমেলার জন্য মহকুমা পিছু ৪ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৫৬
Share:

কৃষিমেলা। —নিজস্ব চিত্র।

কৃষিমেলায় আসা কৃষকদের খিচুড়ি খাওয়াতে হবে। ফরমান রাজ্যের। এই খাতে পৃথক ভাবে অর্থও বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে। শুরু হয়েছে প্রস্তুতিও। কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর প্রভাত বসু মানছেন, ‘‘মেলায় আসা কৃষকদের খিচুড়ি খাওয়ানো হবে।’’ দফতরের অন্য এক আধিকারিকের সংযোজন, ‘‘কিছু না কিছু তো খাওয়ানোই হয়। পেঁয়াজের যা দাম! এখন খিচুড়িই ভাল!’’

Advertisement

রাজ্যের নির্দেশ রয়েছে, ২ থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মহকুমা স্তরে কৃষিমেলার আয়োজন করতে হবে। সেখানে প্রদর্শনী হবে। কৃতী কৃষকদের পুরস্কৃতও করা হবে। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, কৃষিমেলার জন্য মহকুমা পিছু ৪ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে খিচুড়ি খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা করে। কৃষিমেলা হবে তিন দিনের। রাজ্যের নির্দেশ, এরমধ্যে যে কোনও একদিন মেলায় আসা কৃষকদের খিচুড়ি খাওয়াতে হবে। মেদিনীপুরের এক কৃষি আধিকারিক জানিয়েছে, মেলার মূলমঞ্চের পিছনে অস্থায়ী ছাউনিতে খিচুড়ির বন্দোবস্ত করা হবে। যাঁরা বসে খেতে পারবেন না, তাঁদের হাতে খিচুড়ির প্যাকেট ধরিয়ে দেওয়া যায় কি না, সে ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা চলছে।

মেদিনীপুরে কৃষকদের খিচুড়ি খাওয়ানো অবশ্য প্রথম নয়। অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, চলতি বছরের গোড়ার কথা। মেদিনীপুর সদর ব্লকে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের ফর্ম বিলির সূচনার দিনে কৃষকদের বসিয়ে খিচুড়ি খাওয়ানো হয়েছিল। সূত্রের খবর, কৃতী কৃষকের ক্ষেত্রে প্রথম পুরস্কার থাকবে ২ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার দেড় হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার থাকবে ১ হাজার টাকা। কৃতীদের সকলকে শংসাপত্রও দেওয়া হবে। কৃষিমেলায় কিসান ক্রেডিট কার্ডের (কেসিসি) শিবির করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য।

Advertisement

মহকুমাপিছু বরাদ্দ ৪ লক্ষ টাকা। বাকি টাকায় কি হবে? জেলার এক কৃষি আধিকারিক জানাচ্ছেন, বরাদ্দের কত টাকায় কী করতে হবে সে সবই নির্দেশে জানানো রয়েছে। মঞ্চ, স্টল প্রভৃতি তৈরিতে ১ লক্ষ টাকা, আলো, মাইক প্রভৃতি খাতে ২৫ হাজার টাকা, কৃষকদের নিয়ে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ২১ হাজার টাকা খরচ করা যেতে পারে। প্রশিক্ষণ শিবিরে অন্তত ৫০ জন কৃষকের উপস্থিতি থাকতে হবে। কৃষিমেলার তিন দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ৭০ হাজার টাকা খরচ করা যেতে পারে। অন্যদিকে, কৃষিমেলার উদ্বোধনের দিনে কৃষকদের যাতায়াতে পরিবহণ খরচ বাবদ ৩০ হাজার টাকা খরচ করা যেতে পারে। জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, ‘‘তিন দিনের কৃষিমেলার যে কোনও একদিন খিচুড়ি খাওয়ানো হবে। সেই মতো প্রস্তুতি সারা হচ্ছে।’’

কৃষিমেলায় বিপুল খরচ নিয়ে রাজ্যকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘খেলা- মেলা করেই তো লক্ষ লক্ষ টাকা ধ্বংস করা হচ্ছে।’’ জবাবে জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, ‘‘সব কিছুতে খুঁত ধরা কিছু লোকের অভ্যাস।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন