পণের দাবিতে মহিলাকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ

পণের দাবিতে গায়ে পেট্রল ঢেলে মহিলাকে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে খেজুরি-১ ব্লকের হেঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মোহাটি এলাকায়। পুলিশের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খেজুরি শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৮ ০১:০৫
Share:

মৃত মৌমিতা পন্ডা। নিজস্ব চিত্র

পণের দাবিতে গায়ে পেট্রল ঢেলে মহিলাকে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে খেজুরি-১ ব্লকের হেঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মোহাটি এলাকায়। পুলিশের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর দেড়েক আগে মোহাটি গ্রামের রূপকুমার পন্ডার সঙ্গে বীরবন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাটনা গ্রামের মৌমিতা পন্ডার (১৯) বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে অত্যাচার শুরু হয় বলে মহিলার বাপের বাড়ির লোকের অভিযোগ। মৃতার বাবা অর্ধেন্দু শেখর পন্ডা বলেন, ‘‘বছর দেড়েক আগে রূপকুমার আমার মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছিল। পরে বিষয়টি নিয়ে মীমাংসা হওয়ার পর সামাজিক ভাবে ওদের বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়েতে যৌতুক হিসেবে সোনার গয়না, একটি স্কুটি, খাট, মোবাইল-সহ বিভিন্ন সামগ্রী এবং বৌভাতের জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এর পরেও আরও যৌতুকের জন্য মৌমিতার উপর প্রতিদিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হত। মেয়ের এক বছরের ছেলে রয়েছে। মেয়ে গর্ভবতী থাকার সময় প্রথম পাঁচ মাস তার চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি শ্বশুরবাড়ি থেকে। আমরাই মেয়েকে বাড়িতে রেখে যত্ন নিয়েছে। তারপরেও রূপকুমার টাকা চাইত এবং পেট্রল ঢেলে মেয়েকে পুড়িয়ে মারার হুমকি দিত। শেষ পর্যন্ত সেটাই ঘটালো।’’

বাপের বাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৮ অগষ্ট রাত ১২ টা নাগাদ মৌমিতার শ্বশুরবাড়ি থেকে অর্ধেন্দু বাবুর পরিবারের কাছে ফোন আসে যে হঠাৎ আগুন লেগে মৌমিতার শরীরের কিছুটা অংশ পুড়ে গিয়েছে। তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রাত তিনটে নাগাদ খোঁজ নিয়ে জানা যায় মৌমিতা আগের চেয়ে ভাল রয়েছে। ৯ অগষ্ট ভোরে বাপের বাড়ির লোকজন তমলুক হাসপাতালে পৌঁছালে তাঁদের জানানো হয় যে মৌমিতা ভাল রয়েছে। কিন্তু তাঁর কাছে কাউকে যেতে দেওয়া হয়নি। উল্টে অর্ধেন্দুবাবুর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। সকাল দশটায় জানা যায়, মৌমিতার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কারণে তাঁকে কলকাতার এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। পরে দুপুর আড়াইটা নাগাদ জানা যায় মৌমিতা মারা গিয়েছে।

Advertisement

অর্ধেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আট তারিখ রাত ন’টা নাগাদ আমি মেয়েকে ফোন করে কথা বলি। জামাই কোথায় জিজ্ঞেস করলে মেয়ে জানায় বাজারে গিয়েছে। তখন‌ও পর্যন্ত গোলমালের কোনও আঁচ পাইনি। তারপরেই এই কাণ্ড।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মেয়েকে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। প্রথমে স্থানীয় হাতুড়েকে দেখানো হয়েছিল। সেখান থেকে মুগবেড়িয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’’

খেজুরি থানা সূত্রে খবর, এই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন