অনুশীলনে ব্যস্ত অভিজিৎ।নিজস্ব চিত্র
জাতীয় দলের হয়ে খেলা ও একটা স্থায়ী চাকরির স্বপ্ন দেখেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো (সিআর সেভেন)-র ভক্ত অভিজিৎ মেট্যা। এই স্বপ্নপূরণে প্রধান প্রতিপক্ষ দারিদ্রের সঙ্গে লড়াইয়ে তাঁর হাতিয়ার হল ফুটবল। পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি উচ্চতার এই যুবক মাঠে দাপিয়ে বেড়ান স্ট্রাইকার হিসেবে।
তমলুকের চক কামিনার বাসিন্দা বছর তেইশের অভিজিতের এ লড়াই নতুন নয়। সফল ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে অভিজিৎ ছোট থেকেই ফুটবল খেলতে ভালবাসত। বাবা রামকৃষ্ণ মেট্যা নিজেদের বাস চালাতে গিয়ে বছর ১২ আগে এক দুর্ঘটনায় গুরুতর ভাবে জখম হয়ে কর্মক্ষমতা হারান। এর পরেই পরিবারের আর্থিক চিত্রটা পুরোপুরি বদলে যায়। মা মঞ্জু দেবীকে নিয়ে তিন জনের সংসারে হাল ধরতে হয় বালক অভিজিতকে।
স্কুলে পড়ার সময় থেকেই বাড়ির কাছে মাঠে ছুটে যেত ফুটবল দেখতে। পরে মাঠে নেমে পড়ে খেলতে। এর মধ্যে বাবার দুর্ঘটনার পর পড়াশোনার সঙ্গে ফুটবলকে ধ্যানজ্ঞান করে কঠোর অনুশীলন চালিয়ে যায়। খেলাঘর ক্লাবের হয়ে খেলার সঙ্গে মাধ্যমিক, এবং উচ্চ-মাধ্যমিক পাশ করার পরে স্নাতকও হন অভিজিৎ। প্রচেষ্টার ফল মিলছে। তমলুকে রাখাল মেমোরিয়াল ময়দানে ফুটবল শুরু করা অভিজিৎ সালকিয়া ফ্রেন্ডস, কলকাতা কালীঘাট ফ্রেন্ডস হয়ে এখন হাওড়া ইউনিয়ন ক্লাবের ক্যাপ্টেন। এ বছর কলকাতার রেনবো ক্লাবে যোগ দেবেন তিনি।
খেলে পাওয়া এই অর্থ যে সংসার চালানো ও বাবার চিকিৎসার একটা বড় ভরসা তা বোঝেন অভিজিৎ। কলকাতা বা হাওড়ার ক্লাবের খেলার পাশাপাশি তাই জেলার নানা ক্লাবের হয়েও খেলতে যান তিনি। রাখাল ময়দানে অনুশীলনের ফাঁকে অভিজিৎ বলেন, ‘‘সংসার চালাতে এবং বাবার চিকিৎসার জন্য চিন্তায় থাকতে হয়। ক্লাব, আত্মীয় ও শুভানুধ্যায়ীদের নানা সাহায্যে ভরসা পেয়েছি। স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা হলে আমি নিশ্চিন্তে খেলতে পারতাম।’’ তমলুকে খেলাঘর ক্লাবের সভাপতি গোপাল সামন্ত বলেছেন, ‘‘অভিজিতের মতো ফুটবল প্রতিভারা যাতে হারিয়ে না যায়, সেই জন্য সকলের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।