দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার

ওই ঘটনার পরেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৯ ০০:০৪
Share:

চিচিড়ায় জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই লরি। নিজস্ব চিত্র

ভোরের আলো ফোটার আগেই মৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি থানার চিচিড়া এলাকা।

Advertisement

রবিবার ভোরে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সীমানা লাগোয়া ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি থানার চিচিড়া এলাকায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে রোজদিনকার মতো নজরদারি চালাচ্ছিল জামবনি থানার পুলিশের একটি দল। ওই সময় লোধাশুলিগামী একটি লরিকে পুলিশ থামাতেই বিপত্তি ঘটে। লরিটি গতি কমাতেই সেটির পিছনে দ্রুতগতিতে এসে ধাক্কা মারে আর একটি লরি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পিছনের লরির চালক চুনমুন কুমারের (৩০)। চুনমুনের বাড়ি বিহারের বক্সারের নয়ানগরে। জামশেদপুর থেকে লরিতে পাইপ নিয়ে কলকাতার দিকে যাচ্ছিলেন চুনমুন।

ওই ঘটনার পরেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জাতীয় সড়কের অন্য লরির চালক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জাতীয় সড়কে গার্ড রেল দিয়ে রাস্তা আটকে লরি থামিয়ে টাকা আদায় করে পুলিশের একাংশ। লরি চালকদের একাংশের অভিযোগ, বৈধ কাগজপত্র থাকলেও তাঁদের হয়রান করা হয়। রাতের বেলা আচমকা গার্ড রেল ঠেলে লরি থামানোর ফলে এর আগেও এই এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যু হয়েছে একাধিক লরির চালকের। এ দিন এলাকাবাসী ও লরি চালকদের বিক্ষোভের জেরে রাত ৩ টে ৫০ থেকে সকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত জাতীয় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু হয় এলাকাবাসীর। লরির কেবিনে পিষ্ট হয়ে আটকে থাকা চুনমুনের দেহ উদ্ধার করতেও বাধা দেন এলাকাবাসী। শেষ পর্যন্ত জামবনি থানার আইসি বিশ্বজিৎ দাস আরও পুলিশ নিয়ে এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। আসে দমকলও। মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ। গ্যাস কাটার দিয়ে লরির কেবিন কেটে মৃত চালকের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়।

Advertisement

এদিন জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহকে ফোন করে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি বাইরে আছি।’’ পুলিশের এক আধিকারিক অবশ্য জানিয়েছেন, সম্ভবত চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। দ্রুত গতিতে এসে সামনে থাকা একটি লরির পিছনে ধাক্কা মারার ফলেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। টাকা তোলার অভিযোগ সম্পর্কে অন্য এক পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘কোথাও দুর্ঘটনা হলেই লরি চালকরা নিজেদের দোষ আড়াল করতে পুলিশের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ করেন।’’ তবে পুরো ঘটনা শোনার পরে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’’

ভোটের সময় ঝাড়খণ্ড সীমানায় নাকাবন্দি করেছিল পুলিশ। এখন সেই নাকাবন্দির দোহাই দিয়েই তোলাবাজি চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের দাবি, দুর্ঘটনাগ্রস্ত লরিটির সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রতি ঘন্টায় ৪০ কিলোমিটার হওয়ার কথা থাকলেও অনেক বেশি গতিবেগে এসে একটি লরির পিছনে ধাক্কা মেরেছিল। পুলিশের দাবি, লরি চালক সম্ভবত ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। স্থানীয়দের পাল্টা প্রশ্ন, চিচিড়াতেই কেবল বার বার লরির চালকরা ঘুমিয়ে পড়েন। আর দুর্ঘটনার কবলে পড়েন!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement