সাক্ষাৎ: নতুন পড়ুয়াদের সঙ্গে আইআইটির ডিরেক্টর পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
সদ্য স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে পড়তে আসা। একে পরিজনেদের ছেড়ে হস্টেলে থাকতে হবে, তার ওপর পড়াশোনার বিষয় নতুন, প্রতিষ্ঠানের নানা নিয়মনীতি, আর প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ। নতুন এই পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেওয়া যাতে সহজ হয়, সে জন্য প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য ‘ইন্ডাকশন’ কর্মসূচি শুরু করল খড়্গপুর আইআইটি।
গত ২৪ জুলাই শুরু হওয়া এই কর্মসূচির শেষ দিন আজ, রবিবার। টানা ৯ দিন ধরে মূলত প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার নান পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পড়ুয়াদের নানা সামাজিক, ক্রীড়া, সৃজনশীল ক্রিয়াকলাপে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। একান্ত আলাপচারিতাতেই এগিয়েছে ‘ইন্ডাকশন’। কর্তৃপক্ষের মতে, নবাগত পড়ুয়ারা যাতে গোড়ায় কোনও কঠিন পরিস্থিতির শিকার না হয়, সে জন্যই এই উদ্যোগ। এমন কর্মসূচি পড়ুয়াদের প্রেরণা যোগানোর পাশাপাশি চাপ কমাতে যথেষ্ট সাক্ষ্সহায়ক হবে।
গত বছর পর্যন্ত খড়্গপুর আইআইটিতে পরপর কয়েকজন পড়ুয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মানসিক চাপ সামলাতে পারেননি পড়ুয়ারা। স্যোশাল মিডিয়ায় ডুবে ছাত্রছাত্রীদের নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি না হওয়ার সত্যিটাও সামনে আসে। তারপরই এই কর্মসূচির ভাবনা গত বছরই ইন্ডাকশন কর্মসূচির ঘোষণা করেছিল খড়্গপুর আইআইটি। তবে গত বছর সে ভাবে সব কিছু সাজানো যায়নি।
এ বার অবশ্য চারটি ধাপে সুষ্ঠু ভাবে এগিয়েছে গোটা অনুষ্ঠান। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলেছে বিভিন্ন ‘সেশন’। যোগব্যায়াম, খেলাধুলো, বিশেষজ্ঞদের আলোচনা, পাঠ্যসূচি সম্পর্কে আলোচনার পাশাপাশি নবাগতদের জানানো হয়েছে প্রাক্তনীদের সাফল্যের কাহিনি ও প্রতিষ্ঠানের নানা কর্মকাণ্ড। গোটা কর্মসূচির নেতৃত্বে রয়েছেন আইআইটি-র হিউম্যানিটিস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক প্রিয়দর্শী পট্টনায়েক। তিনি বলেন, “এর ফলে পড়ুয়ারা চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে জানবেন, মানসিক চাপ মোকাবিলা করা সহজ হবে। ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যেও সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে।” আইআইটি-র রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহেরও বক্তব্য, “একটি পরিবেশ থেকে অন্য পরিবেশে এলে পড়ুয়াদের মধ্যে চাপ তৈরি হয়। কিন্তু নতুন পরিবেশ সম্পর্কে যদি আগাম ধারণা থাকে, তবে চাপ কাটানো সহজ হয়। ইন্ডাকশন কর্মসূচিতে সেই চেষ্টা হচ্ছে।”
এমন আয়োজনে খুশি ছাত্রছাত্রীরাও। প্রথম বর্ষের ছাত্রী বালাশ্রী বলেন, “এর ফলে আমরা ক্যাম্পাস জীবন সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন হলাম।”