বাউলগানে: গিরি ময়দান স্টেশনের সামনে প্রচার। নিজস্ব চিত্র
গত ৬ মে। বন্ধ থাকা খড়্গপুরের খরিদা রেলগেট টপকে পেরোতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মারা গিয়েছিলেন জৈননগরের প্রৌঢ় বি কালী। সামান্য সময় বাঁচাতে গিয়ে এমন অনেকেই প্রাণের মাসুল গুনছেন। প্রহরী বিহীন রেলগেটে এ ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি। আন্তর্জাতিক রেল নিরাপত্তা সপ্তাহে তাই পথচলতি মানুষকে রেললাইন পারাপারে সচেতন করল খড়্গপুর রেল ডিভিশন।
গত ২৯মে থেকে শুরু হয়েছিল এই কর্মসূচি। শুক্রবার ছিল শেষ দিন। পথনাটিকা, বাউল গান, লিফলেট, ব্যানারে সচেতন করা হল পথচারীদের। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই এক সপ্তাহে খড়্গপুর ডিভিশনের অধীনে সাঁতরাগাছি, রামরাজাতলা, বালিচক, জলেশ্বর, সোরো, দিঘা, হলদিয়া, ঘাটশিলা, খড়্গপুর ও গিরি ময়দান স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেল লাইন পারাপারে পথচারীদের সচেতন করা হয়েছে। শেষ দিনে খড়্গপুর স্টেশনে পথনাটিকা করে স্কাউটস অ্যান্ড গাইডের সদস্যরা। ছিলেন গৌতম সেন বাউল। এসেছিলেন খড়্গপুরের এডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধান, সিনিয়ার ডিভিশনাল সেফটি অফিসার এস কে দে, সিনিয়ার সেফটি অফিসার সমীরণ ভৌমিক। সিনিয়ার ডিভিশনাল সেফটি অফিসার এস কে দে বলেন, “আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সপ্তাহ জুড়ে রেল ক্রসিং নিয়ে পথচারীদের সচেতন করেছি। কী ভাবে দু’দিক দেখে রেললাইন পারাপার করতে হয় তা নাটকে, গানে, লিফলেটে প্রচার করা হয়েছে। বন্ধ রেলগেট পারাপার যে দণ্ডনীয় তাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
খড়্গপুর ডিভিশনে ২২৪টি প্রহরী বিহীন রেলগেট রয়েছে। এমন রেলগেটে দুর্ঘটনা ঘটে সব থেকে বেশি। ২০১৬ সালের মার্চে খড়্গপুর গ্রামীণের সাদাতপুরে প্রহরী বিহীন রেলগেটে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল তিন অটো যাত্রীর। তারপরেও অবশ্য ঝুঁকির পারাপার থামেনি। এ ক্ষেত্রে একদিন বা এক সপ্তাহ নয়, সারাবছর সচেতনতা প্রচার প্রয়োজন বলে মনে করছেন পথচারীরা। এ দিন পথনাটিকা দেখার ভিড়ে হাজির কলেজ ছাত্রী তৃষা রায় বলছিলেন, “এ ভাবে একদিন স্টেশনে নয়, সারাবছর গ্রামেগঞ্জে যদি এই ধরনের নাটক দেখানো যায়, তবেই অনেক প্রাণ বাঁচবে।”