প্রতীকী ছবি।
প্রকাশ্যে ধূমপানে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল আগেই। তবে তা বলবৎ করায় খামতি ছিল। স্কুল চত্বর ও তার আশপাশেও প্রকাশ্য ধূমপান, তামাক সেবনে রাশ টানা যায়নি। পরিস্থিতি দেখে তৎপর শিক্ষা দফতর। স্কুল চত্বরে ধূমপান-তামাক সেবন নিষিদ্ধ করতে জেলায় জেলায় পাঠানো হয়েছে নির্দেশিকা। বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে তামাক নিয়ন্ত্রণ কমিটি গড়তে হবে। স্কুলের সামনে বোর্ড লাগিয়ে প্রধান শিক্ষকের নাম ও মোবাইল নম্বর জানাতে বলা হয়েছে। স্কুল ও তার আশপাশে কাউকে ধূমপান করতে দেখলে যাতে চটজলদি অভিযোগ জানানো যায়, সে জন্যই এই পদক্ষেপ।
২০০৩-এ দেশে বলবৎ হয়েছিল ‘সিগারেট অ্যান্ড আদার্স টোব্যাকো প্রোডাক্টস অ্যাক্ট’ বা কোটপা। সেই আইন অনুযায়ী হোটেল, রেস্তোরাঁ, এয়ারপোর্টের মতো এলাকায় নির্দিষ্ট ‘স্মোকিং জোন’ ছাড়া প্রকাশ্যে ধূমপান ও তামাক সেবনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ মিটারের মধ্যে ধূমপান করলে ২০০ টাকা জরিমানার নিদানও রয়েছে। ওই সীমারেখার মধ্যে সিগারেট, বিড়ি, গুটখা বিক্রিতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু সে সব খাতায় কলমেই। ঘাটাল-সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় প্রকাশ্যে ধূমপান চলছে। স্কুল-কলেজের গেটের সামনে সুখটান দিচ্ছে পড়ুয়ারাও। ছবিটা বদলাতেই কড়া হয়েছে শিক্ষা দফতর।
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের মধ্যেই জেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ কমিটি তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঢিলেমি বরদাস্ত হবে না। হাইস্কুলের কমিটিতে থাকবেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক, পরিচালন কমিটির সভাপতি, এক অভিভাবক প্রতিনিধি ও এক স্বাস্থ্য কর্মী। প্রাথমিক স্কুলের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক, এক সহকারী শিক্ষক বা শিক্ষিকা, অভিভাবক প্রতিনিধি ও এক স্বাস্থ্যকর্মীকে নিয়ে গড়তে হবে তামাক নিয়ন্ত্রণ কমিটি। স্কুলগুলি ওই কমিটি গঠন করল কি না, তা সম্পূর্ণ তথ্য ও ডিস প্লে বোর্ডের ছবি-সহ জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে পাঠাতে হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা স্কুল পরিদর্শক অমরকুমার শীল বললেন, “জেলার সব স্কুলেই সরকারি নিয়মের কথা জানিয়ে চলতি মাসে কমিটি গড়তে বলা হয়েছে। মাঝে মধ্যে স্কুলে পরিদর্শনও করা হবে।” স্কুলের পাঁচিল থেকে একশো মিটারের মধ্যে সিগারেট বা তামাকজাত দ্রব্যের দোকান
বন্ধে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। আর সেমিনারও করতে বলা হয়েছে।
এই নিয়ম বলবৎ করতে স্কুলগুলির সদিচ্ছা জরুরি বলে মত সব মহলের। ঘাটালের ইসলামপুর প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সোমেশ ভট্টচার্যের মতে, “স্কুল চত্বরে যাঁরা ধূমপান করেন, তাঁরা পড়ুয়াদের ক্ষতি করেন।” শিক্ষা দফতরের এক কর্তার কথায়, “যথেষ্ট আঁটোসাঁটো পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আশা করা যায় সুফল মিলবে।”