হাসপাতালে অব্যবস্থা, পিছনে কি শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব!

শুধু চিকিৎসকের অভাবই নয়, হাসপাতালে অস্ত্রোপচার না হওয়া নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৩৮
Share:

দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকেই হাসপাতালের অব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। —ফাইল ছবি

দিঘায় বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক বৈঠকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটিতে চিকিৎসকের অভাবের কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছিল। তা শুনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবিলম্বে চিকিৎসকের ব্যবস্থা করতে বলেন।

Advertisement

স্বাস্থ্য জেলা হিসাবে ঘোষিত নন্দীগ্রামের হাসপাতালে এমন অবস্থায় ‘অস্বস্তি’তে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্যসচিব জানান, বুধবারই নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে একজন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হয়েছে। যদিও শুক্রবার রাতে হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোনও চিকিৎসক সেখানে যোগ দেননি।

শুধু চিকিৎসকের অভাবই নয়, হাসপাতালে অস্ত্রোপচার না হওয়া নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে সব্যসাচী দাস মহন্ত নামে এক চিকিৎসকের যোগ দেওয়ার কথা। তিনি বর্তমানে মহেশতলা হাসপাতালে কর্মরত। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসক সেখান থেকে ‘রিলিজ’ অর্ডার পেলেও নন্দীগ্রামে এখনও যোগ দেননি। তবে হাসপাতলে নানা অব্যবস্থা নিয়ে শুধু রোগী নয়, ক্ষোভ রয়েছে শাসক দলের অন্দরেও। এই নিয়ে সম্প্রতি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সহ বিভিন্ন দফতরে দরবারও করেছিল তৃণমূলের একাংশ। হাসপাতালের অব্যবস্থা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের বলেও মনে করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ।

প্রসঙ্গত, দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে নন্দীগ্রাম থেকে জয়ী তথা জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি শেখ সুপিয়ান হাসপাতালের অব্যবস্থা নিয়ে বলতে শুরু করেন। এর কারণ হিসাবে তৃণমূলের কিছু নেতার ধারণা, নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আবু তাহের। গোড়া থেকেই তাহের আর সুপিয়ানের মধ্যে ‘ঠান্ডা লড়াই’ রয়েছে। তাই তাহের গোষ্ঠীকে গোষ্ঠীকে ‘চাপে’ রাখতেই মুখ্যমন্ত্রীর সামনে সুপিয়ান সরব হন। বিষয়টি নিয়ে আবু তাহের বলেন, ‘‘প্রোটোকল অনুযায়ী অভিযোগ জানানো উচিত ছিল। তবে, শাসক দলের জন প্রতিনিধি হয়ে এভাবে প্রশাসনিক সভায় বলা উচিত নয়। চিকিৎসকের অভাবে পরিষেবা বন্ধ, এমন উদাহরণ নেই।’’ দলের একাংশের মতে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হতে না পেরে তাহেরকে ‘হেয়’ করতেই প্রশাসনিক বৈঠকে হাসপাতালের অব্যবস্থা তুলে ধরেন সুপিয়ান।

শেখ সুপিয়ানের অবশ্য দাবি, ‘‘নন্দীগ্রামের জন্য মুখ্যমন্ত্রী অনেক কিছু করেছেন। কিন্তু, এলাকার উন্নয়ন নিয়ে সাধারণ মানুষ যে অভিযোগ করেছিলেন, সেটাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছি।’’

তবে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এক্স রে এবং ইসিজি পরিষেবা চালু হয়েছে। শুক্রবার তিন জন এক্স-রে এবং দুজন ইসিজি পরিষেবা পেয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন