পাইপ সারায়নি পুরসভা, ঘোলা জলে নাকাল ঝাড়গ্রাম

পৃথক জেলার স্বীকৃতি পাওয়াটা আর কয়েক মাসের অপেক্ষা। কিন্তু ঝাড়গ্রাম শহরেই পানীয় জলের করুণ দশা। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শক্তিনগর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ দীর্ঘ ছ’মাস ধরে পুরসভার নলবাহিত জল আসছে ঘোলা।

Advertisement

দেবরাজ ঘোষ

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৫
Share:

পান করতে হয় এই জলই। নিজস্ব চিত্র।

পৃথক জেলার স্বীকৃতি পাওয়াটা আর কয়েক মাসের অপেক্ষা। কিন্তু ঝাড়গ্রাম শহরেই পানীয় জলের করুণ দশা। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শক্তিনগর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ দীর্ঘ ছ’মাস ধরে পুরসভার নলবাহিত জল আসছে ঘোলা। সে জলে হাত মুখ ধোয়া যায় না, পানীয় হিসাবে ব্যবহার করা তো দূরের কথা। সব জেনে স্থানীয় কাউন্সিলার ঝাড়গ্রামের উপ-পুরপ্রাধান শিউলি সিংহ বলেছেন, ‘‘শক্তিনগরের কাছে পাইপ ফেটে গিয়েছে। তাই ঘোলা জল আসছে। ওই পাইপ মেরামতির কাজ চলছে। আশা করি মাসখানেকের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।’’

Advertisement

আরও মাস খানেক সময় লাগবে শুনে অসন্তুষ্ট বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, ছ’মাস তো কেটেই গিয়েছে। আর কত সময় লাগবে? স্থানীয় সন্ধ্যা কুণ্ডুর গলায় ঝরে পড়ে ক্ষোভ, ‘‘বারবার পুরসভায় জানিয়েছি। কোনও লাভ হয়নি। এখন আর বলি না।’’ বাসিন্দাদের দাবি মাস ছয়েক আগে পরিষ্কার জল আসত পুরসভার কলে। কিন্তু গত ছ’মাস ধরে লোহার কটূ গন্ধ যুক্ত, লালচে জল বেরচ্ছে। পরস্থিতি এতটাই খারাপ যে বন্ধ হয়েছে যেতে বসেছে জামদা নিম্নবুনিয়াদি বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিলের রান্না। গত কয়েক মাস স্কুল কর্তৃপক্ষ পাশের বাড়ির নলকূপ থেকে জল এনে রান্নার কাজ চালাচ্ছেন। কিন্তু গরম পড়লে কী হবে, তা ভেবেই চিন্তিত প্রধান শিক্ষিকা সঙ্ঘমিত্রা সেনরায়। তিনি বলেন, ‘‘এ রকম চলতে থাকলে রান্না বন্ধ করে দিতে হবে। স্কুল ১২২ জন পড়ুয়া, তাদের পানীয় জলের জোগান দিতেও পারছি না। পুরসভা, মহকুমাশাসক— সকলকে জানিয়েছি। লাভ হয়নি।’’

ঘোলা জল খেয়ে পেটে ব্যথা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে স্কুলের বেশ কিছু পড়ুয়া। স্থানীয় অলকা গড়াই, মঞ্জু পাল, আরতি রুইদাসরা জানালেন, এমনিতেই পাড়ায় কলের সাংখাও। জল পড়ে সরু হয়ে। তার মধ্যে এই ঘোলা জল। ছেঁকে বা ফুটিয়ে খাওয়াও প্রায় অসম্ভব। কখনও কখনও কল দিয়ে বেরিয়ে আসে চাপচাপ লাল কাদা। এলাকায় রয়েছে সরকারি একটি কুয়ো। কিন্তু তার অবস্থা বেশ খারাপ। বাসিন্দাদের দাবি গ্রীষ্মে কালে দূরে পুকুরে গিয়ে স্নান করেন তাঁরা। কিন্তু পানীয় জলও যদি না মেলে তবে পরিস্থিতি খুবই খারাপ হয়ে যাবে। সিপিএম লোকাল কমিটির সদস্য শ্যামল সনগিরি বলেন, ‘‘চারিদিকে উন্নয়নের পোস্টার লাগাচ্ছে শাসক। কিন্তু শহরের মানুষকে পানীয় জলটুকু দিতে পারছে না। তাহলে গ্রামের মানুষের কী অবস্থা!’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন