মিলেমিশে: কালীপুজোর উদ্বোধন নিমতলাচকে। নিজস্ব চিত্র
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আলো মেদিনীপুরে। কালীপুজোর উদ্বোধন করলেন মেদিনীপুর টাউন মুসলিম কমিটির সম্পাদক সৈয়দ রাশদান আলি আলকাদেরি। রাশদান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা হজ কমিটিরও সম্পাদক। উদ্বোধনের পরে তিনি বলছিলেন, “পুজোর অনুষ্ঠানে যেতে ভাল লাগে। অনেক মানুষের সঙ্গে দেখা হয়। শুভেচ্ছা বিনিময় হয়।’’ তাঁর কথায়, “ইসলাম ধর্মও শান্তির কথা বলে। ধর্ম হয়তো আলাদা, তবে সবার আগে আমরা মানুষ।’’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরের নিমতলাচকের কাছে বর্ডার ক্লাবের কালীপুজোর উদ্বোধন হয়। উদ্বোধন করেন মেদিনীপুর টাউন মুসলিম কমিটির সম্পাদকই। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা গৌতম কণ্ডাল বলছিলেন, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিই মেদিনীপুর শহরের মূলধন। সেই বন্ধন আরও মজবুত করতে আমাদের এই উদ্যোগ।’’ এলাকার বাসিন্দা শেখ সানির কথায়, “উদ্যোগটা প্রশংসারই। মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকাটাই তো বড় কথা।’’
বুধবার সন্ধ্যায় কর্নেলগোলার নিউ ইয়ং সোসাইটির কালীপুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও ছিলেন রাশদান আলি, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের মেদিনীপুর শাখার সম্পাদক স্বামী মিলনানন্দ। পুজোর উদ্বোধন করেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। ছিলেন জেলার সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি, মেদিনীপুর জেলা আদালতের জিপি সুকুমার পড়্যা। সকলেই সম্প্রীতি রক্ষার বার্তা দেন।
প্রবীণরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মেদিনীপুরে সব সময়ই এই সম্প্রীতির ছবির দেখা মেলে। ইদের লাচ্চা, সিমুই যেমন হিন্দুর ঘরে পৌঁছে যায়, তেমন দুর্গাপুজো-কালীপুজোর অন্নভোগ যায় মুসলিম পরিবারে। যেমন, এ বার মহরমের মিছিলে সামিল লোকজনকে পুষ্পস্তবক দিয়ে বরণ করে মিষ্টিমুখ করিয়েছেন দুর্গোত্সব কমিটির লোকজনেরা। আবার মহরমের দিন শহরের কুইকোটা এলাকায় মহরমের মিছিল বেরনোর পরে বিসর্জনের শোভাযাত্রা বেরোয়। বর্ডার ক্লাবের কালীপুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা গৌতম কণ্ডাল বলছিলেন, “পুজো যে শুধু হিন্দুদের, ইদ- মহরম যে শুধু মুসলিমদের, এর কোনও মানে নেই। আর দুর্গা হোক বা কালী, মা তো সকলের। সেখানে ধর্ম-বর্ণ-জাতির ভাগ থাকবে কেন!’’