খাদ্যতালিকার পাশেই প্রকল্প-প্রচার। নিজস্ব চিত্র
‘রক্তদান জীবনদান’, ‘নির্মল বাংলা আমাদের অঙ্গীকার’, ‘কন্যাশ্রী আমাদের ভবিষ্যৎ’— এ সব পড়ে অনেকেই ভাবছেন রাস্তার ধারে সরকারি প্রকল্পের প্রচারে এই লাইনগুলি তাঁরা প্রায়ই দেখে থাকেন। শুধু প্রচারের হোর্ডিং নয়, এ বার বিয়ের প্রীতিভোজের মেনু কার্ডেও জায়গা পেল সরকারি প্রকল্পের প্রচার!
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুভাষ চট্টোপাধ্যায় তাঁর ছোট ছেলে অভীকমঙ্গল চট্টোপাধ্যায়ের বিয়ে ছিল গত বৃহস্পতিবার। গোয়ালতোড়ের পিয়াশালার নম্রতার সঙ্গে বিয়ে হয়েছে অভীকমঙ্গলের। গড়বেতার ফতেসিংহপুরে শনিবার ছিল বিয়ের প্রীতিভোজ। মেনুকার্ড হাতে পেয়ে অবাক হন প্রীতিভোজে আমন্ত্রিত অতিথিরা। তাঁরা দেখেন, মেনুকার্ডে রক্তদান, মিশন নির্মল বাংলা, কন্যাশ্রী প্রকল্প নিয়ে প্রচার করা হয়েছে। রয়েছে বিভিন্ন প্রকল্পের লোগোও।
কেন এই উদ্যোগ?
শিক্ষকতার পাশাপাশি সামাজিক কাজকর্মও করেছেন সুভাষবাবু। লেখালেখির প্রতিও ঝোঁক রয়েছে তাঁর। সময় পেলেই গল্প-কবিতা লেখেন। এখনও বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্মে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন তিনি। ছোট ছেলের বিয়ের প্রীতিভোজের মেনুকার্ডে সরকারি প্রকল্পের প্রচার করে সেই সামাজিক দায়বদ্ধতার বার্তাই দিতে চেয়েছেন তিনি। সুভাষবাবু বলছিলেন, “সমাজের জন্য কিছু করতে পারলে নিজেরই ভাল লাগে। এই ভাললাগাটা অন্য রকম। অন্য একটা অনুভূতি।” তাঁর কথায়, “আমাদের সকলেরই সমাজের প্রতি কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেটা পালন করা উচিত।” সুভাষবাবু বলছিলেন, “প্রীতিভোজের মেনুকার্ডে একটু অভিনবত্ব আনার চেষ্টা করেছি। সরকারি প্রকল্প নিয়ে অতিথিদের সচেতন করার চেষ্টা করেছি। সকলে এমন মেনুকার্ডের প্রশংসা করেছেন। এটাই প্রাপ্তি।”
সুভাষবাবুর স্ত্রী অঞ্জলিদেবীও বলছিলেন, “এ রকম সামাজিক কাজকর্ম দেখে নিজের গর্বই হয়। সব সময় বাড়ির বাইরে গিয়ে সামাজিক কাজে যোগ দিতে পারি না। তবে মন থেকে পূর্ণ সমর্থন থাকে।” আর সুভাষবাবুর বড় ছেলে অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “জানতাম বাবা সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে কিছু একটা করবেন। কিছু না- করলে বরং অবাকই হতাম।”
খুশি পুত্রবধূও। নম্রতার কথায়, “শ্বশুরমশাইয়ের এই কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়। এ বার থেকে আমিও সামাজিক কর্মকাণ্ডে পাশে থাকার চেষ্টা করব।”