Eid

ইদের আগেই ঘরে ফেরা, স্বস্তি রানিহাটিতে

এ দিন সকালে বাড়ি ফিরেছেন পাঁশকু়ড়ার রানিহাটি গ্রামের চার বাসিন্দা। গত কয়েকদিন বন্যায় সেখানে আটকে ছিলেন তাঁরা। কাজের খোঁজে কেরলে গিয়েছিলেন রানিহাটের চার যুবক

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৮ ০০:২৭
Share:

ফেরা: মঙ্গলবার পাঁশকুড়ায় আখতার, এন্তাজেরা। নিজস্ব চিত্র

পরিকল্পনা ছিল ইদের ছুটিতে বাড়িতে ফিরবেন। টিকিটও কাটা ছিল। সেই মতো ইদের আগে মঙ্গলবার বাড়ি ফিরতে পেরেছেন বটে। কিন্তু এর মাঝে কেটে গিয়েছে কয়েকটি বিভীষিকাময় রাত।

Advertisement

বন্যা কবলিত কেরল থেকে এ দিন সকালে বাড়ি ফিরেছেন পাঁশকু়ড়ার রানিহাটি গ্রামের চার বাসিন্দা। গত কয়েকদিন বন্যায় সেখানে আটকে ছিলেন তাঁরা। কাজের খোঁজে কেরলে গিয়েছিলেন রানিহাটের চার যুবক— শেখ এন্তাজ, শেখ মোজাম্বেল রহমান, আখতার খান, শেখ মইদুল। কোইকোট এলাকায় কাঠের কাজ করতেন তাঁরা।

আখতারেরা জানিয়েছেন, যে তাঁরা এলাকায় কাজ করতেন, সেটা অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকা। সেখানে বন্যা হতে পারে, তা তাঁরা আশা করেননি। ইদের জন্য তাঁরা সকলেই বাড়ি ফিরবেন বলে ঠিক করেছিলেন। সেই মতো গত ১৭ অগস্টের ট্রেনের টিকিও কাটা ছিল। কিন্তু স্বাধীনতা দিবসের রাত থেকে তাঁদের এলাকার চেনা ছবিটা পাল্টে যায়।

Advertisement

শেখ এন্তাজ কথায়, ‘‘১৫ অগস্ট রাত ২টো থেকে আমাদের এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করে। একাধিক বাঁধ থেকে জল ছাড়া হচ্ছিল। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় একটু স্বস্তি ছিল। তবে আশেপাশের এলাকা সম্পূর্ণ জলমগ্ন হয়ে যায়।’’ মোজাম্বেলরা জানান, আবহাওয়া খারাপ হওয়ার সাথে সাথে বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায়। শেষে নৌকায় করে জল পেরিয়ে, ঘুরপথে তাঁরা সকলে মেঙ্গালুরু পৌঁছন। সেখান থেকে সোজা বেঙ্গালুরু। বেঙ্গালুরু থেকে ট্রেন ধরে এ দিন সকালে খড়্গপুর পৌঁছন ওই চার জন এবং তাঁদের এক বন্ধু শেখ রাজা। তিনি বাগনানের বাসিন্দা।

তাঁদের আসার খবর শুনেই রানিহাটি গ্রামের ওই চার যুবকের পরিজন পাঁশকুড়া স্টেশনে উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছিলেন। ইদের আগে ঘরের ছেলে ফিরে আসায় খুশির মেজাজ রানিহাটিতে।

প্রিয়জন ঘরে না ফেরায় উদ্বেগের ছবিও রয়েছে। কর্মসূত্রে গত দশ বছর ধরে কেরলে রয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর থানার গোবর্ধনপুর গ্রামের যুবক মান্নান খান। বন্যায় আটকে পড়ার পরে মান্নানের সঙ্গে তাঁর বাড়ির লোকের সঙ্গে ফোনে শেষ কথা হয়েছে পাঁচদিন আগে। তারপর বহু চেষ্টাতেও মান্নানকে ফোনে ধরতে পারেননি বাবা, মা, স্ত্রী, ছেলেমেয়েরা। সকলেই উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।

বছর আঠাশের মান্নান রাজমিস্ত্রির কাজে কেরলের মেনকা পার্ক এলাকায় থাকেন। পাঁচ দিন আগে বাড়িতে যখন শেষ ফোন করেছিলেন, তখন মান্নান জানিয়েছিলেন, চারপাশ জলে ডুবে রয়েছে। গাড়ি চলাচল করছে না। তাই বাড়ি ফিরতে পারছেন না। মান্নানের বাবা সুরাবুদ্দি খান বলেন, ‘‘ছেলের সঙ্গে পাঁচ দিন আগে ফোনে শেষ কথা হয়েছিল। তারপর থেকে ওর ফোন বন্ধ। খুব চিন্তায় আছি। কোথাও খোঁজ করব বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন