Kunal Ghosh

দিব্যেন্দুর স্ত্রীর কাছে যান, মহিলা কর্মীদের নির্দেশ কুণালের

বিধানসভায় হেরেছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে নন্দীগ্রামে তাই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার দলকে চাঙ্গা করতে চাটাই বৈঠক শুরু করলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতা কুণাল ঘোষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম, কাঁথি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২২ ০৯:১১
Share:

কাঁথি শহরে চা-চক্রে কুণাল ঘোষ। রবিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

একদিন আগেই সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাড়িতে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সেজ ভাই তথা তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। তারপরেই রবিবার সাংসদ দিব্যেন্দুর স্ত্রী সুতপা অধিকারীর কাছে রাজ্যের সমস্ত প্রকল্প নিয়ে কথা বলার জন্য দলের মহিলা কর্মীদের যাওয়ার নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

Advertisement

শনিবার রাতে রামনগরের কর্মসূচি শেষ করে কাঁথিতেই ছিলেন কুণাল। রবিবার সকালে শান্তিকুঞ্জর অদূরে ক্যানাল পাড়ে একটি চা চক্র করেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এদিন যেখানে চায়ের আসর বসিয়েছিলেন সেটি অধিকারীদের নিজের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড। যার কাউন্সিলর তৃণমূলের তনুশ্রী চক্রবর্তী। এদিন তাঁকে পাশে বসিয়েই কুণাল দলের মহিলা ও বঙ্গ জননী সংগঠনের কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘যাঁরা আমাদের ভোট দেননি তাঁদের থেকে দূরে সরবেন না। তথাকথিত সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেসের বাড়িতেও যেতে হবে। ওদের বাড়ি থেকে মহিলাদের ভোটটা আমাদের পেতে হবে।’’ এরপরই তাঁর সংযোজন, ‘‘রাজ্য সরকারের কি কি প্রকল্প আছে তা মহিলাদের বোঝাতে হবে। দিব্যেন্দুর স্ত্রীকে দিয়েই শুরু করুন। উনিও নিশ্চয়ই যুক্তিসঙ্গত কথা বলবেন।’’

বিধানসভায় হেরেছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে নন্দীগ্রামে তাই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার দলকে চাঙ্গা করতে চাটাই বৈঠক শুরু করলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতা কুণাল ঘোষ। সম্প্রতি দলের তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের বিশেষ দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। কর্মীদের কাছে পৌঁছতেই এই কর্মসূচি।

Advertisement

রবিবার নন্দীগ্রামের বয়াল ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চাটাই বৈঠকে কর্মীদের উদ্দেশ্যে কুণালের বার্তা, ‘‘নন্দীগ্রামের মানুষ কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চেয়েছিলেন। কারণ নন্দীগ্রামের যা কিছু উন্নয়ন তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই হয়েছে।’’ নন্দীগ্রামে বারবার সিবিআই তদন্ত, তৃণমূল কর্মীদের ধরপাকড়, এনআইএ তল্লাশিতে মনোবল হারানো কর্মীদের চাঙ্গা করার বার্তাও দেন কুণাল। তিনি বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম, খেজুরি-সহ পূর্ব মেদিনীপুরে মানুষ যাতে বিনা অপরাধে আইনি হয়রানির শিকার না হন, আপনারাও যাতে মাথা উঁচু করে পাল্টা মামলা করতে পারেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাই আলাদা আইনজীবী সেল করেছেন। তাঁরা নন্দীগ্রামের গ্রামে গ্রামে ঘুরবেন। ওদের কোনও সন্ত্রাসবাদীকে এক মিনিট বাইরে ছেড়ে রাখা হবে না।’’

বিজেপি ঘুরে ফের তৃণমূলে ‘ঘর ওয়াপসি’ হওয়া প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন বিঁধেছেন বিজেপিকে। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আমি বিজেপিতে গিয়ে দেখেছি বঙ্গ বিজেপির মধ্যে সং আছে গঠন নেই।’’ বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পাল পাল্টা বলেন, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদন্দ্ব এড়াতে চাটাই বৈঠক একটা আইওয়াশ ছাড়া কিছু না। সেটা এলাকার মানুষ বুঝে গিয়েছেন।’’

তবে কুণালের নির্দেশ প্রসঙ্গে সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী কিংবা তাঁর স্ত্রী সুতপা অধিকারী কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে বিজেপির কাঁথি নগর মণ্ডল সভাপতি তথা পুরসভার কাউন্সিলর সুশীল দাস বলেন, ‘‘তৃণমূল মহিলাদের সম্মান দিতে জানে না। দিব্যেন্দু অধিকারী তাদের দলেরই সাংসদ। অথচ দলীয় সাংসদের স্ত্রীকেই তারা বিশ্বাস করতে পারছে না। তাই এ ধরনের কথাবার্তা বলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন