পড়ুয়া: বইখাতা হাতে নিয়ে খুদেরা। নিজস্ব চিত্র
চাল আসেনি। তাই খাওয়াও হয়নি ওদের।
ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম ব্লকের আড়রা পঞ্চায়েতের নাগরিপদা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুরা খাবার না-পেয়ে ফিরে যাচ্ছে গত প্রায় ১৮ দিন ধরে। একই অবস্থা ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের আওতাধীন প্রসূতিদেরও। পুষ্টিকর খাদ্য পাওয়ার কথা তাঁদের। কিন্তু তা মিলছে না বলে অভিযোগ।
ওই কেন্দ্রে সব মিলেয়ে ৪৮ জন পড়ুয়া রয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী সরস্বতী জাল বলেন, ‘‘২০ নভেম্বর থেকে চাল নেই। বিষয়টি সুপারভাইজারকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু চাল পাইনি।’’
এই ঘটনায় নয়াগ্রাম ব্লকের শিশু বিকাশ প্রকল্প দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। অভিযোগকে হাতিয়ার করে আসরে নেমে পড়েছেন বিরোধীরা। জঙ্গলমহলের সভা-সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই দাবি করেন, এখানে কেউ অভুক্ত থাকেন না। কিন্তু নাগরিপাদার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তি শুরু হয়েছে প্রশাসন ও শাসকদলের অন্দরেও। নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, ‘‘এ রকম হওয়ার কথা নয়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে অবিলম্বে সমস্যা মেটানোর জন্য বলব।’’
জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর এফসিআই থেকে চালের বরাদ্দ না-আসায় এই সমস্যা। সাধারণত কোনও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে মজুত চাল-ডালের সঙ্কট হলে সাময়িক ভাবে নিকটবর্তী অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কেন তা করা হয়নি, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
শিশু বিকাশ সেবা প্রকল্পের ঝাড়গ্রাম জেলা আধিকারিক স্বর্ণেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাল না-থাকার বিষয়টি ওই ব্লকের সংশ্লিষ্ট অফিসারের জানানো উচিত ছিল। কিন্তু উনি তা জানাননি।’’ এমনিতেই জেলায় ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এফসিআই থেকে চাল আসার কথা ছিল। কিন্তু তা আসেনি। বিষয়টি বুধবার জেলাশাসককে জানিয়েছেন বলে স্বর্ণেন্দুবাবুর দাবি।
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুপড়ুয়া মনোজিৎ পাত্র, নন্দিতা পাত্র জানায়, অনেকদিন রান্না হচ্ছে না। বিষয়টি জানতে নয়াগ্রাম ব্লকের সিডিপিও প্রণব বিশ্বাসকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘খোঁজ নিতে হবে।’’
ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আর অর্জুন বলেন, ‘‘তদন্ত করে দেখা হবে।’’