বেলপাহাড়িতে জুড়তে নারাজ, চিঠি লালগড়ের

লালগড়বাসীর একাংশের আপত্তিপত্র পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখে রাজ্যকে রিপোর্ট পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:১০
Share:

জেলার সদর মহকুমাকে ভাঙতে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য সরকার। প্রস্তাবিত বেলপাহাড়ি মহকুমার মধ্যে থাকছে লালগড় (বিনপুর-১) ব্লক। এতে আপত্তি রয়েছে একাংশ লালগড়বাসীর। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, বেলপাহাড়ি নয়, তাঁরা ঝাড়গ্রাম সদর মহকুমাতে থাকতে চান।

Advertisement

লালগড়বাসীর একাংশের আপত্তিপত্র পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখে রাজ্যকে রিপোর্ট পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন। সূত্রের খবর, এক সময় লালগড় থেকে জঙ্গলমহলে অশান্তি ছড়িয়েছিল। রাজ্যে পালাবদলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটকের কাজ করেছিল লালগড়ের আন্দোলন। সেই লালগড়ের বাসিন্দাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর।

২০১৭-র ৪ এপ্রিল পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রাম মহকুমাটি পৃথক জেলা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। নতুন জেলায় শুরু থেকে একটিই মহকুমা রয়েছে। সেই ঝাড়গ্রাম সদর মহকুমাকে ভেঙে তিনটি মহকুমা করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য। প্রশাসন সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রাম সদর মহকুমার অধীনে থাকবে ঝাড়গ্রাম পুর এলাকা, ঝাড়গ্রাম ব্লক, সাঁকরাইল ও জামবনি ব্লক। গোপীবল্লভপুর মহকুমায় থাকবে গোপীবল্লভপুর-১, গোপীবল্লভপুর-২ ও নয়াগ্রাম ব্লক। বেলপাহাড়ি মহকুমায় থাকবে বিনপুর-১ (লালগড়) ও বিনপুর-২ (বেলপাহাড়ি) ব্লক।

Advertisement

কেন বেলপাহাড়ি মহকুমায় থাকতে চান না? লালগড়ের বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে থাকার সময় লালগড়ের বাসিন্দারা মেদিনীপুর শহরের উপর বেশি নির্ভরশীল ছিলেন। কারণ, লালগড় ব্লক সদর থেকে ভীমপুর-পিরাকাটা হয়ে মেদিনীপুর শহরের সড়কপথে দূরত্ব ৪২ কিলোমিটার এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব ভাল। লালগড়ের আমকলায় কংসাবতীর উপর সেতু হওয়ায় জেলা সদর ঝাড়গ্রামের দূরত্ব মাত্র ২০ কিলোমিটার। লালগড় থেকে ধামরো হয়ে ঝাড়গ্রাম যাওয়ার নতুন রাস্তা হচ্ছে। নতুন রাস্তা দিয়ে লালগড় থেকে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব আরও কয়েক কিলোমিটার কম। অন্য দিকে, লালগড় থেকে বেলপাহাড়ির দূরত্ব ৩৪ কিলোমিটার। অনগ্রসর বেলপাহাড়ি ব্লকটি ঝাড়খণ্ড রাজ্য এবং পুরুলিয়া-বাঁকুড়া সীমান্তে। লাল

লালগড়ের হাইস্কুল শিক্ষক সুব্রত মণ্ডল, ব্যবসায়ী দীনেশ দাস, লোকসংস্কৃতি গবেষক পঙ্কজকুমার মণ্ডল এক কথায় বলছেন, “যে কোনও প্রয়োজনে আমরা এতদিন মেদিনীপুরে যেতাম। এখন ঝাড়গ্রাম জেলা শহরের সঙ্গে লালগড়ের দূরত্ব অনেক কমে গিয়েছে। সেই কারণে আমরা ঝাড়গ্রাম সদর মহকুমায় থাকতে চাই। অনগ্রসর বেলপাহাড়ি এলাকায় থাকতে চাই না। এটাই প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” তাঁরা জানান, বেলপাহাড়ি মহকুমায় লালগড়কে রাখা হলে লালগড়, কাঁটাপাহাড়ি, রামগড়, বৈতা, ধরমপুর এলাকার বাসিন্দাদের ভীষণই সমস্যা হবে। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলন, “লালগড়ের বাসিন্দারা বিনপুর-১ ব্লককে (লালগড়) ঝাড়গ্রাম সদর মহকুমায় রাখার দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট মহলকে জানানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন