বাজার ছেয়েছে এলইডি-তে। —নিজস্ব চিত্র।
দীপাবলিতে আলোর মালায় সেজে উঠেছে সময়ের এলাকা। বড় মণ্ডপ থেকে শুরু করে বাড়িও সেজে উঠেছে আলোয়। আর আলোর সেই মূলত এলইডির হাত ধরেই। কিন্তু বছর খানেক আগেও ছবিটা এরকম ছিল না। প্রদীপ আর মোমবাতিতেই সেজে উঠত গৃহস্থ বাড়ি। মণ্ডপের কথা অবশ্য আলাদা। কিন্তু চিনা এই আলো বদলে দিয়েছে আলোর পথ চলা।
হলদিয়ার বিভিন্ন দোকানে গিয়ে দেখা গেল এলইডি আলোর নানা সম্ভার। ঘট আলো, ডিস্কো আলো, প্লাস্টিকের পঞ্চপ্রদীপেই ঠাসা দোকান। জানা গেল, গড়ে ৩০০০ হাজার বিক্রি হয়েছে গত কয়েক দিনে। আর মাটির ছোট প্রদীপ বিক্রি হয়েছে পাঁচ টাকা হিসেবে। তবু দিনে ৩০০ টাকার প্রদীপ বিক্রি করতে গিয়েও নাজেহাল হয়ে গিয়েছেন বিক্রেতারা। হলদিয়া মহকুমার মৃৎশিল্পী গণেশ মাইতির কথায়, ‘‘এখন মাটির তৈরি প্রদীপের চাহিদা কমে যাচ্ছে। সব কিছুর দাম বাড়ছে। কিন্তু গত কয়েক বছরে মাটির প্রদীপের দাম এতটুকুও বাড়েনি। প্রদীপের জ্বালানির দাম বেড়ে গিয়েছে। তাই মাটির প্রদীপের বিক্রিও কমে যাচ্ছে।’’
তবে এলইডি লাইট বিক্রেতা নিতাই দাসের মত একেবারে ভিন্ন। তাঁর বক্তব্য, “মাটির প্রদীপের সঙ্গে সঙ্গে তেল ও সলতের প্রয়োজন হয়। এমনকি মাটির প্রদীপ থেকে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। ফলে ক্রেতারা প্রদীপের পরিবর্তে এলইডি প্রদীপের দিকেই ঝুঁকছেন।’’বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু মাইতি, গোপাল সেনের কথায়, ‘‘প্রাচীনকাল থেকে মাটির প্রদীপ জ্বালানো হয় দীপাবলীতে। কিন্তু সলতে পাকানো, তেল ঢালা সময় সাপেক্ষ। তার থেকে এলইডি জ্বাললেই কেল্লাফতে। কম টাকায় পুষ্টি।’’
আর এলইডির এই রমরমাতেই অন্ধকার কুমোরপাড়ায়। মহিষাদল, কোলাঘাট, ভগবানপুর, পটাশপুর এবং হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের কয়েক হাজার পরিবার মাটির প্রদীপ তৈরি করে অর্থ উপার্জন করেন। বিক্রি কম হওয়ায় সমস্যায় ওই পরিবাররা। তবু হাল ছাড়েননি তাঁরা। বিশ্বাস করেন, এলইডির এই সাময়িক চমকে বদল আসবেই। মানুষ ফের ভরসা রাখবেন সেই প্রদীপের স্নিগ্ধতায়।