মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলমহল সফরের আগে মুখ পুড়ল শাসক দলের। সিপিএম সমর্থক এক মহিলাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার হলেন পাঁচ তৃণমূল কর্মী। অভিযুক্তরা ওই মহিলার স্বামীকেও বেধড়ক মারধর করেছে বলে অভিযোগ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জামবনি থানার চিল্কিগড় গ্রামের ঘটনা। অভিযোগ, বৃহহস্পতিবার রাতে বাড়ি থেকে টেনে বের করে ওই মহিলার শ্লীলতাহানি করেন তৃণমূলের স্থানীয় কয়েকজন কর্মী। এরপর শুক্রবার সকালে বাস থেকে টেনে নামিয়ে ওই মহিলার স্বামীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার পাঁচ তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতরা হলেন সত্যনারায়ণ দেও, অতনু রায়, শান্তনু রায়, সুনীল খামরুই ও বিকাশ শূর। সকলের বাড়ি চিল্কিগড় গ্রামে। ধৃতদের শনিবার ঝাড়গ্রাম প্রথম এসিজেএম আদালতে তোলা হলে তাঁদের জেল হাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
সিপিএমের অভিযোগ, বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই জামবনি ব্লক জুড়ে বিরোধী কর্মী-সমর্থকদের উপর নানা ভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে শাসক দলের লোকেরা। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে ফের জয়ন্তবাবুর বাড়িতে চড়াও হন তৃণমূলের লোকজন। জয়ন্তবাবুর ছেলে পেশায় লরিচালক অসীম মুখোপাধ্যায়কে মারধর করা হয়। অসীমবাবুকে পিটুনির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য রুখে দাঁড়ান স্ত্রী সহেলিদেবী। ওই মহিলাকে শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে গোলমাল মিটে যায়। এরপর শুক্রবার সকালে ঝাড়গ্রামের কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার সময় আক্রান্ত হন অসীমবাবু। সকালে চিল্কিগড়ে বাসে ওঠেন তিনি। ডুলুং নদীর কজওয়ে পেরোতেই বাসটি থামান শাসক দলের স্থানীয় লোকেরা। অভিযোগ, অসীমবাবুকে বাসের ছাদ থেকে নামিয়ে লাঠিপেটা করতে করতে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ অসীমবাবুর খোঁজে বেরোয়। পরে তৃণমূলের স্থানীয় কার্যালয় থেকে অসীমবাবুকে উদ্ধার করে পুলিশ। অসীমবাবুর বাবা জয়ন্তবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অসীমবাবুকে চিল্কিগড় গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁকে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে অভিযুক্তরা জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা জামবনি ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সমীর ধলের অনুগামী। সমীরবাবুর আদিবাড়ি চিল্কিগড়ে। সমীরবাবুর বক্তব্য, “বদমায়েশি করলে গ্রেফতার তো হবেই। আইন আইনের পথে চলবে।”