ক্ষোভ কমাতে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পের পাশে ফুটবল 

কয়েকদিন আগেই এইসব সাঁনারা-সহ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের বিক্ষোভে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পাওয়ার গ্রিডের সাবস্টেশন তৈরির কাজ। শোরগোল পড়ে গিয়েছিল জেলা প্রশাসনে। ছুটে এসেছিলেন ব্লক ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দ্রকোনা রোড শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৫৬
Share:

খেলার আগে করমর্দন করছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শচীন মক্কর। নিজস্ব চিত্র

হাজির প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। ব়ড় কড়াইয়ে রান্না হচ্ছে খিচুড়ি। সঙ্গে পাঁচমেশালি তরকারি আর চাটনি। পিকনিক নয়। ফুটবল প্রতিযোগিতা আর বস্ত্রদান কর্মসূচি উপলক্ষে বুধবার এমন আয়োজন হয়েছিল। চন্দ্রকোনা রোডের সাঁইনারা গ্রামে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পের ঠিক পাশে।

Advertisement

কয়েকদিন আগেই এইসব সাঁনারা-সহ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের বিক্ষোভে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পাওয়ার গ্রিডের সাবস্টেশন তৈরির কাজ। শোরগোল পড়ে গিয়েছিল জেলা প্রশাসনে। ছুটে এসেছিলেন ব্লক ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। ফলের বাগান নষ্ট করে পাওয়ার গ্রিড করে আখেরে মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করা হচ্ছে— এই দাবিতে স্থানীয়দের উপর্যুপরি অবস্থান বিক্ষোভ, মিছিলে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল চন্দ্রকোনা রোডের বুড়ামারা, সাঁইনারা সহ ৬-৭ টি এলাকা। পরিস্থিতির গুরুত্বের কথা ভেবে গড়বেতা ৩ ব্লক প্রশাসন তড়িঘড়ি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে। বিলি করা হয় ছাপানো লিফলেট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৬ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়। গত দু’দিন ধরে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করে ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করা হয়। তারপর এই ফুটবল আর বস্ত্রদান কর্মসূচি। উদ্যোক্তা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ।

আগেই মাইকিং প্রচার করে ফুটবল প্রতিযোগিতার কথা জানানো হয়েছিল এলাকার বাসিন্দাদের। পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পের পাশেই সাঁইনারা ফুটবল মাঠে স্থানীয় ১০টি দলকে নিয়ে এ দিন থেকে শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা। চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। এ দিন সকাল থেকে এই আয়োজনে শামিল হয়েছিলেন সাঁইনারা সহ পাশাপাশি বুড়ামারা, শিমূলডিহা প্রভৃতি গ্রামের বহু মানুষ। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রায় ৮০০ জনের হাতে কম্বল, শাড়ি, ত্রিপল তুলে দেওয়া হয়। এ দিনের কর্মসূচিতে ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সচিন মক্কর, বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো, বিডিও অভিজিৎ চৌধুরী, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আকাশদীপ সিংহ, বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ ভুঁইয়া, রাজীব ঘোষ সহ পুলিশ, পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের কর্মকর্তারা। মঞ্চ থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সচিন মক্কর বলেন, ‘‘মানুষকে ভুল বোঝাবেন না। আমরা মানুষকে সচেতন করছি, সজাগ আছি, পুলিশ প্রশাসন মানুষের পাশে আছে। অযথা বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।’’ বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে উন্নয়ন চালাচ্ছেন তা বানচাল করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, যদিও মানুষই সেই ষড়যন্ত্র ভেস্তে দেবে।’’

Advertisement

ফুটবল খেলা দেখে, শীতবস্ত্র নিয়ে, পাত পেড়ে খেয়ে দাসু মুর্মু বললেন, ‘‘অশান্তি ঝামেলা কার ভাল লাগে। আমাদেরকে ভাল করে বোঝালেই হত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন