—ফাইল চিত্র।
প্রায় দু’মাস ধরে জ্বরের প্রকোপ চলছে পাঁশকু়ড়ার হাউর এলাকায়। অনেকের রক্তেই মিলছে ডেঙ্গির জীবাণু। গত মাসে জ্বরে ভুগে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ, সামান্য ঝোপঝাড় পরিষ্কার করতেও আসেননি কোনও সাফাইকর্মী। তাই স্থানীয় ক্লাব সদস্যরাই নেমেছেন এলাকা সাফাইয়ে।
শনিবার হাউরের আমদান গ্রামের একটি ক্লাবের সদস্যরা এলাকায় মশা মারার রাসায়নিক স্প্রে করেন। নিজেরাই ঝোপজঙ্গলও কেটে সাফ করেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও যোগ দেন অভিযানে। বাড়ি বাড়ি দিয়ে আবর্জনা সাফাইও করা হয়।
ক্লাবের সম্পাদক তুষার সামন্ত বলেন, ‘‘এখনও অনেক জ্বরে ভুগছেন। শুধু আমাদের গ্রামেই ৪২ জনে জ্বর হয়েছে। পাশের আটাং, দশাং- ৭-৮ টি গ্রামে বহু মানুষের জ্বর।’’ তাঁর অভিযোগ, মশা মারাতে পঞ্চায়েত কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাই তাঁরা নিজেদের উদ্যোগে কীটনাশক কিনে এনে এলাকায় ছড়াচ্ছেন।
কিন্তু এ বিষয়ে কেন আরও আগে উদ্যোগী হলেন না ক্লাব সদস্যরা? সে প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তুষারবাবু। তবে স্থানীয়রা অনেকেই খুশি। স্থানীয় অমল নায়েক, জন্মেজয় আদকরা বলেন, ‘‘তবু তো ওঁরা কাজ করছেন। মশা মারার রাসায়নিক, জমা জল সরানো, এলাকা পরিষ্কারের কোনও কাজ করছে না পঞ্চায়েত।
পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুজিত রায় অবশ্য বলেন, ‘‘হাউরে জমা জল সরানো ও ঝোপ-জঙ্গল সাফাইয়ে বাসিন্দাদের নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে।’’
দু’মাস ধরে জ্বরের প্রকোপ চলছে আটাং, দশাং, আমদান, পুরুল, ধামাইট, সাহাড়দা, কুলিয়া প্রভৃতি গ্রামে। অনেকেই পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, হাউরে গত জুলাই মাস থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৪০৬ জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ২০ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছে। এখনও ১৫ জন জ্বর নিয়ে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ দিন সকালে হাসপাতালে গিয়ে তাঁদের জ্বরে আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করেন বিধায়ক ফিরোজা বিবি।
হাসপাতাল সুপার শচীন্দ্রনাথ রজক অবশ্য বলেন, ‘‘জ্বরে আক্রান্তের হার আগে চেয়ে কমেছে। ডেঙ্গি নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করার কাজ চালানো হচ্ছে।’’