শেষ সময়ে প্রকল্প জমা দেন উমা

পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পরিকল্পনা-উন্নয়ন আধিকারিক অয়ন নাথ বলেন, ‘‘শুক্রবার ঝাড়গ্রামের সাংসদের এক প্রস্তাব জমা পড়েছে। প্রস্তাব যেখানে পাঠানোর পাঠানোও হয়েছে।’’ সেই প্রস্তাব কি এখন অনুমোদন করা যাবে?

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ২১:৫২
Share:

প্রায় পাঁচ বছরের সময়কালে বার বার সাংসদ কোটার অর্থ সঠিক ভাবে খরচ না করার অভিযোগ উঠেছিল ঝাড়গ্রামের তৃণমূল সাংসদ উমা সরেনের বিরুদ্ধে। কিন্তু তারপরেও টাকা খরচের ক্ষেত্রে সেভাবে সক্রিয় হননি উমা। রবিবার ভোট ঘোষণার দু’দিন আগে, শুক্রবার সাংসদ তহবিলের টাকা থেকে প্রস্তাবিত ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজকে ১০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব জমা দেন ঝাড়গ্রামের সাংসদ।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পরিকল্পনা-উন্নয়ন আধিকারিক অয়ন নাথ বলেন, ‘‘শুক্রবার ঝাড়গ্রামের সাংসদের এক প্রস্তাব জমা পড়েছে। প্রস্তাব যেখানে পাঠানোর পাঠানোও হয়েছে।’’ সেই প্রস্তাব কি এখন অনুমোদন করা যাবে? জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের উত্তর, ‘‘প্রস্তাব অনুমোদন হবে কি না সেটা পরের ব্যাপার।’’ ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজকে সাংসদ তহবিল থেকে ১০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব তো শুক্রবারই দিয়েছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে উমার দাবি, ‘‘আগেই দিয়েছি।’’

এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরে জেলা তৃণমূলের একাংশ মনে করছে, শেষ মুহূর্তে টাকা খরচের পরিমাণ বাড়িয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বার্তা দিতে চেয়েছিলেন উমা। তবে শেষ পর্যন্ত এ বারের লোকসভায় ঝাড়গ্রামে প্রার্থী বদল করেছে তৃণমূল। প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় আদিবাসী ও পেশায় শিক্ষিকা বীরবাহা সরেন। তবে প্রার্থী বদল করলেও মঙ্গলবার দলীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সময়ে উমাকে পাশে বসিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘উমা দলের কাজ করতে চায়।’’

Advertisement

জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, সাংসদ তহবিলে প্রতি বছরে ৫ কোটি টাকা করে বরাদ্দ হয়। সেই হিসেবে একজন সাংসদ তাঁর তহবিলে পাঁচ বছরে ২৫ কোটি টাকা পান। প্রথম বছরের বরাদ্দ খরচ হলে তবেই দ্বিতীয় বছরের বরাদ্দ মেলে। উমা এখনও পর্যন্ত পেয়েছেন ১০ কোটি। বাকি ১৫ কোটি টাকা তিনি পাননি। যে ১০ কোটি তিনি পেয়েছিলেন তার মধ্যে ৮ কোটি ৩ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে। ২১ লক্ষ টাকার কাজ এখন চলছে। ৭২ লক্ষ টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা। তবে তার এখনও ভেটিং করা হয়নি। ভেটিং হলে প্রস্তাবিত প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ঝাড়গ্রামের সাংসদকে সতর্ক করেছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। উমার সাংসদ তহবিল নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরাও। ঝাড়গ্রামের এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘উনি হয়তো ভেবেছিলেন, রিনিউ হয়ে যাবে। কিন্তু তা তো হল না!’’ বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের খোঁচা, ‘‘সাংসদ তহবিলের টাকাই খরচ হয়নি। ঝাড়গ্রামে তৃণমূল এ বার ভোট চাইবে কোন মুখে?’’ ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের আহ্বায়ক উজ্জ্বল দত্তের দাবি, ‘‘এলাকার সাংসদ এলাকার উন্নয়নে টাকা বরাদ্দ করেন। মানুষের কাজ করেন। উনিও হয়তো করেছেন। আগে-পরেটা কোনও বিষয় নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন