ঘাটাল শহরে সিপিআই প্রার্থী তপন গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রচার। নিজস্ব চিত্র
জোড়াফুল এবং পদ্ম দুই প্রতীকে দুই হেভিওয়েট। একদিকে টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা দীপক অধিকারী ওরফে দেব, অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। কেউ বলছেন সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি, কারও মতে গোটা রাজ্যের মধ্যে হাতেগোনা যে ক’টা আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে ঘাটাল। দুই প্রার্থী একে ওপরের প্রতি সৌজন্য দেখালেও সমর্থকেরা অবশ্য পুরোপুরি লড়াইয়ের ‘মুডে’। প্রচারে খামতি রাখতে রাজি নয় কোনও পক্ষই। বাসস্ট্যান্ড হোক কিংবা চায়ের ঠেক—ঘাটাল লোকসভার অন্তর্গত প্রায় প্রতিটি জায়গাতেই এখন ভোট নিয়ে আলোচনা। কে কী ভাবে প্রচার করেন, কে কাকে কী বলেন, কার রোড শোতে বেশি ভিড় হবে, সে সব নিয়ে কৌতূহল এখন তুঙ্গে।
আগে দেওয়াল লিখনই ছিল প্রচারের একমাত্র মাধ্যম। তবে বছর দশেক আগে পরিস্থিতি বদলেছে। প্রচারের মাধ্যম হিসেবে এসেছে ফ্লেক্স, ফেস্টুন। সব কিছুকে ছাপিয়ে প্রচারে জায়গা করে নিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। সেখানে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে চলছে প্রচার। একই সঙ্গে দেওয়াল লিখনও চলছে পুরোকদমে। মাস খানেক আগে থেকেই দেওয়াল দখলের কাজ শুরু করে দিয়েছিল সব রাজনৈতিক দল। যে যার দলীয় প্রতীক একে দেওয়াল দখল করে রাখে।
প্রার্থীর নাম ঘোষণার পরে তৃণমূল দেওয়াল লিখতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই অনেক দেওয়ালে জোড়াফুল ফুটেছে। বিজেপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতে কিছুটা দেরি হওয়ায় কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল। তবে ভারতী ঘোষকে প্রার্থী ঘোষণার পরে বিজেপি কর্মীরাও এখন উজ্জীবিত। শহরের দেওয়ালে দেবের নাম বেশি দেখা গেলেও গ্রামের অলি-গলির দেওয়াল যুদ্ধে দুই দল প্রায় এখন প্রায় সমান-সমান।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক সভাপতি দিলীপ মাঝি বলেন, “আমরা তৈরিই ছিলাম। নাম ঘোষণার পরই সকাল সন্ধ্যায় দেওয়াল লিখন সহ জোর কদমে প্রচার শুরু হয়েছে।” ভারতী বলছেন, “প্রচারে অভিনবত্ব কী করে আনা যায় সেটা ভাবছি। একমাত্র লক্ষ্য, গ্রাম-শহরের লোকের কাছে সহজ সরল ভাবে নিজের মতকে স্পষ্ট করা।”
প্রার্থীর নামে তেমন চমক না থাকলেও পিছিয়ে নেই সিপিএমও। তাদের প্রার্থী তপন গঙ্গোপাধ্যায় শনিবার পদযাত্রা করেন। সেটি শুরু হয় ঘাটাল কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে। সেখান থেকে প্রার্থী-সহ বাম প্রার্থীরা ঘাটাল কুঠিবাজারে যান। তারপর পুরনো এলআইসি মোড় হয়ে মিছিল আসে ঘাটাল কলেজ মোড়ে। সেখানে ছোট একটি সভা হয়। সন্ধ্যায় খড়ার শহরেও পদযাত্রায় করেন বাম প্রার্থী। সিপিএম নেতা উত্তম মণ্ডল বলেন, “নাম ঘোষণার আগে থেকেই প্রচার চলছিল। এ বার প্রার্থী নিজেই প্রচারে নেমে পড়লেন।”