বেলপাহাড়ির সভায় একমঞ্চে মমতা-উমা। ফাইল চিত্র
গত ৫০ দিন দলীয় প্রচারে তাঁকে চোখে দেখা যায়নি। তবে জঙ্গলমহলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দু’টি সভাতেই হাজির থাকলেন ঝাড়গ্রামের বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ উমা সরেন। তা নিয়ে শাসকদলের কর্মীদের মধ্যেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
উমাকে এ বার টিকিট পাননি। তবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার দিন উমাকে পাশে বসিয়ে মমতা বলেছিলেন, ‘‘ও দলের কাজ করতে চায়।’’ তারপর গত ১৪ মার্চ জামবনির টুলিবড়ে নির্বাচনী কর্মিসভায় তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল উমাকে। ওই দিন তৃণমূল প্রার্থী বিরবাহা সরেনের হাত ধরে উমা কর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘আমার থেকেও বেশি ব্যবধানে বিরবাহাকে জেতানোর শপথ নিন।’’ তারপর প্রচারের ৫০ দিন পেরিয়ে গেলেও উমাকে দলের কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। যা নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন ওঠে। তবে রবিবার বেলপাহাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চে হাজির হয়ে যান উমা। চেয়ার ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রীর কানের কাছে মুখ নামিয়ে কথাও বলতে দেখা যায় তাঁকে। সোমবারও গোপীবল্লভপুরের সভামঞ্চে ছিলেন উমা। এ দিনও উমা মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু বলতে গিয়েছিলেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী উমার কথা না শুনে তাঁকে চেয়ার দেখিয়ে বসতে বলেন।
উমার সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। বারবার ফোন করলেও তা বেজে গিয়েছে। তবে উমার ‘অন্তর্ধান’ ও ‘আবির্ভাব’ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে অম্লমধুর চর্চা চলছে। শাসকদলের এক প্রবীণ নেতা বলছেন, ‘‘বিদায়ী সংসদের এখনও আশা মুখ্যমন্ত্রী ওকে রাজ্যসভার সাংসদ করবেন। তাই হয়তো নেত্রীর গুডবুকে থাকার জন্য দু’টি সভায় হাজির হয়েছিলেন। কর্মীরা বিদায়ী সাংসদকে চায় না। সেটা বিলক্ষণ জানেন বলেই উমা প্রচারে সম্ভবত আসছেন না।’’ তৃণমূলের একাংশ কর্মী বলছেন, ৫ বছর সাংসদ থেকেও উমা সাংসদ তহবিলের টাকা খরচ করতে পারেননি। দলকে বারবার অস্বস্তিতে ফেলেছেন। জেনিভায় একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গিয়ে কুড়মিদের আদিবাসী করার পক্ষে সওয়াল করে আদিবাসী সমাজের বিরাগভাজনও হয়ে ওঠেন উমা।
তবে প্রচারে উমার থাকা-না থাকা নিয়ে মুখে কুলুপ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের। দলের ঝাড়গ্রাম জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।