রাস্তার ধারে জড়ো করে রাখা এই বাঁশের জন্যই ঘটে দুর্ঘটনা। নিজস্ব চিত্র
গোটা জেলা জুড়ে বিভিন্ন রাস্তা এমনকী জাতীয় সড়কের ধারে ইমারতির জিনিস ফেলে রাখা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ পদক্ষেপ করলেও বার বার এই কাজকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদেরই বিরুদ্ধে। এর জন্য দুর্ঘটনা ঘটলে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। যারা রাস্তার ধারে ইট-বালি ফেলে রাখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জোরদার হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতির যে হেরফের হয়নি তার প্রমাণ মিলল ফের দুর্ঘটনায় বছর চারেকের এক শিশুর মৃত্যুতে। জখম মাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল ৬টা নাগাদ মায়ের সঙ্গে সাইকেলে স্কুলে যাচ্ছিল চার বছরের সবুজ মাইতি। ময়না থানার পেটুয়া মোড় থেকে ঢেউভাঙা বাজারগামী নির্মীয়মাণ গ্রামীণ সড়কের ধারে রাস্তার উপরেই জড়ো করে রাখা ছিল প্রচুর বাঁশ। নারকেলদাহ গ্রামের কাছে উল্টোদিক থেকে আসা একটি বালির লরিকে রাস্তা দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জড়ো করে রাখা বাঁশের উপরে পড়ে যান মা উর্মিলা দেবী। সাইকেল থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে যায় সবুজ। নিমেষে তাকে পিষে দেয় লরির পিছনের চাকা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সবুজ। বাঁশের আঘাতে জখম মাকে স্থানীয় লোকজন ময়না ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। দুর্ঘটনার পর এলাকার লোকজন রাস্তায় বিক্ষোভ দেখায়। ভাঙচুর করা হয় লরি। যদিও দুর্ঘটনার পরই লরিচালক পালিয়ে যান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তার ধারে ইমারতির জিনিস থেকে বাঁশ, লোহা ফেলে রাখার জন্য আকছার দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যে কারণে এ দিন প্রাণ গেল বছর চারেকের ওই শিশুর। পাশাপাশি তাঁরা ওই রাস্তায় লরি চলাচল বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর ময়না থানা থেকে পুলিশ সেখানে যায়। বাসিন্দাদের দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে রাস্তায় অবরোধ তোলে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, এলাকায় একাধিক ইটভাটা রয়েছে। দিনের বেলায় প্রতিনিয়ত বড় বড় লরি ওই সব ইটভাটায় যাতায়াত করায় রাস্তা দিয়ে হেঁটে, সাইকেলে, মোটরসাইকেলে যেতে গিয়ে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। ফলে রাস্তায় যাতায়াত করা আতঙ্কের হয়ে উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, লরির চালক ও খালাসিকে ধরতে তদন্ত চালানো হচ্ছে।