সাংবাদিক বৈঠকে কুড়মি সমন্বয় মঞ্চ। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে নানা দাবি জানিয়েও কিছুই মেলেনি বরং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা তাঁদের বঞ্চনাই করেছেন। এমনকি তাঁদের জাতির লোক ভোটে জেতার পর সমাজের কথা না বলে ওই রাজনৈতিক দলের কথাই বলেছেন। তাই নিজেদের কথা তুলে ধরতে দাবি আদায় করতে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপর নির্ভরশীল হতে চান না কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষেরা। তাঁরা এবারে সরাসরি নামতে চলেছে রাজনৈতিক ময়দানে।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহল এলাকায় প্রার্থী দিতে চলেছে কুড়মি সমন্বয় মঞ্চ। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করবেন বলে মঞ্চের তরফে জানিয়েছেন অশোক মাহাত। শুক্রবার মেদিনীপুরে সাংবাদিক বৈঠক করেন তাঁরা। সেখানে মঞ্চের তরফে ছিলেন সুশীল মাহাত রাজেশ মাহাত-সহ আরও কয়েকজন কুড়মি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি।
প্রায় ৭০ বছর ধরে তফসিলি উপজাতির তালিকায় নেই কুড়মি সম্প্রদায়। তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কুড়মিরা। অশোকের অভিযোগ, নির্বাচন এলেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু পরে কেউ আর কোনও ভাবে উদ্যোগী হন না। তাই নিজেদের বাঁচার তাগিদে এবং দাবি পূরণের লক্ষ্যে যাতে সাংগঠনিক ভাবে তা আদায় করা যায় সেজন্য রাজনৈতিক অবস্থান নেওয়া হবে।
ইতিমধ্যেই হিসেব করা হয়েছে জঙ্গলমহলে বিধানসভা কেন্দ্র গুলিতে কুড়মি সম্প্রদায়ের ভোটার কত রয়েছে। তার উপর নির্ভর করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তারা। রাজ্যে ২০ থেকে ২৫টি বিধানসভা আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন অশোক।
এর আগে ডিসেম্বরে একাধিক কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। ২৬ দফা দাবি নিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলাশাসকের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ থেকে অনশন শুরু করেছিলেন তাঁরা। পরে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আলোচনায় বসেন। কিন্তু দাবি পূরণ হয়নি। রাজ্য উদ্যোগী হলেও কেন্দ্র কোনও উদ্যোগী হচ্ছে না বলেও জানিয়েছে অশোক। অশোকের কথায়, জঙ্গলমহল-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কুড়মি জনজাতির মানুষদের নিয়ে বিধানসভা ভিত্তিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পুরুলিয়া জেলায় ৯টি বিধানসভা এলাকায় কুড়মি জনজাতির ভোটার রয়েছেন ৪০.১৩ শতাংশ, বাঁকুড়া জেলায় ৩টি বিধানসভা এলাকায় ৩২.২৫ শতাংশ, ঝাড়গ্রাম জেলায় ৪টি বিধানসভা এলাকায় ৪১.৮৭ শতাংশ, এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৪টি বিধানসভায় ৩৩.৬৮ শতাংশ ভোটার রয়েছে।