চটজলদি পরীক্ষা, ঘোষণা চলছে মাইকে

সোমবার স্কুল খুললেই পরীক্ষা। স্কুল খুললেই পরীক্ষা। পরীক্ষা...পরীক্ষা...পরীক্ষা। প্রায় এই কায়দাতেই প্রচার চলছে পূর্ব মেদিনীপুরে। না-করে উপায়ও যে নেই। ছুটিতে থাকা ছাত্রছাত্রীরা জানবে কী করে, যে প্রথম দিন স্কুলে গিয়েই তাদের বসতে হবে পরীক্ষায়!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৬ ০১:২৬
Share:

সোমবার স্কুল খুললেই পরীক্ষা। স্কুল খুললেই পরীক্ষা। পরীক্ষা...পরীক্ষা...পরীক্ষা।

Advertisement

প্রায় এই কায়দাতেই প্রচার চলছে পূর্ব মেদিনীপুরে। না-করে উপায়ও যে নেই। ছুটিতে থাকা ছাত্রছাত্রীরা জানবে কী করে, যে প্রথম দিন স্কুলে গিয়েই তাদের বসতে হবে পরীক্ষায়!

বছরের প্রথম পরীক্ষা। স্কুলের তরফে সূচি তৈরি হয়ে গিয়েছিল এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই। কিন্তু গরমের কারণ দেখিয়ে আচমকা ১১ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের ছুটি ঘোষণা করে দিয়েছে সরকার। আর তারই জেরে শুরু হয়েছে সমস্যা। কোথাও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আবার কোথাও মাঝপথে পরীক্ষা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

এরই উপর বিপত্তি গরমের ছুটি ঘোষণায়। চলতি মাসে ১৬ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত কয়েকদিন স্কুল খোলা থাকছে। তার পর ফের ১৯ মে থেকে গরমের ছুটির কথা ঘোষণা করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। ফলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোনও কোনও হাইস্কুল তড়িঘড়ি করে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে। এমনকী বাদ যাচ্ছে না ১৯ মে দিনটি।

সরকারিভাবে গরমের ছুটি শুরু হওয়া সত্ত্বেও ওই দিনে ছাত্রীদের পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানিয়েছে তমলুক শহরের রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আবার তমলুকের মথুরী কল্যাণিকা বিদ্যাভবনের প়ঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির ইউনিট টেস্ট মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল অনির্দিষ্টকালীন ছুটির দাপটে। সেই স্থগিত হয়ে যাওয়া পরীক্ষাগুলি ১৬ থেকে ১৮ মে’র মধ্যে নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি এমনই যে, এই নির্দেশ ছাত্রছাত্রীদের কাছে কী ভাবে পৌঁছবে, তা নিয়ে অভিনব কৌশল নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার এলাকায় মাইকে প্রচার করে জানানো হয়েছে পরীক্ষার কথা।

১৯ মে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণা মজুমদার বলেন, ‘‘অল্প সময়ের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করতে বাধ্য হয়েই এটা করা হয়েছে।’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সুজিতকুমার মাইতি কিন্তু বলেন, ‘‘সরকারিভাবে ছুটির দিনে স্কুলে পরীক্ষা নেওয়া উচিত নয়। আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ তমলুকের মথুরী কল্যাণিকা বিদ্যাভবনেও ১৬ থেকে ১৮ মে’র মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শক্তিপদ জানা বলেন, ‘‘এপ্রিলে ছুটির নির্দেশিকা জারির আগেই আমাদের অধিকাংশ বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়ে গিয়েছিল। তাই ১৯ মে গরমের ছুটির আগে বাকি দু’একটি বিষয়ের পরীক্ষা নিয়ে নেওয়া হবে। এলাকায় মাইক প্রচার করা হয়েছে।’’

আবার কোথাও স্কুল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নেওয়া নিয়ে দোটানায় পড়েছেন। ক্ষুব্ধ বহু অভিভাবকও। সান্ত্বনাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের অভিভাবক অরূপ ভৌমিক বলেন, ‘‘একটানা দীর্ঘদিন ধরে গরমের ছুটি চলার ফলে স্কুলে পড়াশোনা হচ্ছে না। এ ভাবে টানা ছুটি না দিয়ে স্কুলে পড়ার সময় কিছুটা কমিয়ে ক্লাস চালু রাখা উচিত ছিল।’’ পাঁশকুড়ার ঘোষপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রের অভিভাবক বলেন, ‘‘আমাদের মত গরিব পরিবারে পড়াশোনার জন্য গৃহশিক্ষক দেওয়ার ক্ষমতা নেই। স্কুল শিক্ষকদের উপরেই নির্ভর। একটানা স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনার অনেকটা ক্ষতি হয়ে গেল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন