মধুমিতা ভুঁইয়া। ফাইল চিত্র
জেরা শুরু হতেই ভুল মানলেন মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কে টাকা নয়ছয়ের ঘটনায় ধৃত মধুমিতা ভুঁইয়া। মেনে নিলেন, ব্যাঙ্ক থেকে টাকা নেওয়া তাঁর ভুল হয়েছে।
মেদিনীপুরের মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির সম্পাদিকা ছিলেন মধুমিতাদেবী। প্রায় দেড় মাস পালিয়ে বেড়ানোর পরে গত শনিবার ভোরে কলকাতার নিউটাউনের ফ্ল্যাট থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তিনি এখন সিআইডি হেফাজতে রয়েছেন। সিআইডির এক সূত্রের বক্তব্য, সমবায় ব্যাঙ্কের সম্পাদিকার পদটি সান্মানিক। অর্থাৎ এই পদে থেকে কেউ বেতন বা ভাতা নিতে পারেন না। কিন্তু ব্যাঙ্কের নথি ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, গত কয়েক বছরে মধুমিতাদেবী প্রায় ১০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন ব্যাঙ্ক থেকে। মধুমিতাদেবী অবশ্য তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছেন, তাঁর নামে ওই টাকা তোলা হয়েছে ঠিকই, তবে টাকা তাঁর হাতে আসেনি। স্বামী সুকুমার ভুঁইয়াই ওই টাকা নিয়েছেন। ওই বিপুল অঙ্কের টাকা তিনি ব্যাঙ্কে ফেরত দিতে রাজি বলেও তদন্তকারীদের জানিয়েছেন মধুমিতাদেবী।
এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি মামলার তদন্তকারী অফিসার নীরেন ভট্টাচার্য। তবে সিআইডির অন্য এক কর্তা বলেন, “একটা বিষয় উনি স্বীকার করেছেন। মেদিনীপুরের এই ব্যাঙ্কে বিপুল পরিমাণ টাকা তছরুপ হয়েছে। কী ভাবে তছরুপ হল, কোথায় গেল, জিজ্ঞাসাবাদে তা জানার সব রকম চেষ্টা চলছে।’’
ইতিমধ্যে এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন মধুমিতাদেবীর স্বামী সুকুমারবাবু। যদিও গ্রেফতারের পরে সিআইডির কাছে তিনি দাবি করেছিলেন, স্ত্রীর সঙ্গে গত তিন বছর তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না। তদন্তকারী অফিসারেরা অবশ্য সুকুমারবাবুর এই দাবিতে এতটুকুও অবাক হননি। সিআইডির এক কর্তার কথায়, ‘‘এই অভিযুক্ত মামলা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন। ফলে, এমন দাবি তো করবেনই। তবে স্ত্রীর সঙ্গে যে তাঁর বেশ ভালই সম্পর্ক ছিল, সেই প্রমাণ ইতিমধ্যে আমরা পেয়ে গিয়েছি।’’ মধুমিতাদেবীও তদন্তকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, স্বামীর সঙ্গে তাঁর খুব ভাল সম্পর্ক ছিল না। স্বামীর সব ব্যাপারে তিনি জানেন না।
যে মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কে আর্থিক তছরুপ হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই ‘মহিলা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি’ রয়েছে মেদিনীপুর শহরের বার্জটাউনে। এখানে প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা তছরুপের অভিযোগের মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। এখনও পর্যন্ত টাকা নয়ছয়ের এই মামলায় চারজন ধরা পড়েছেন। সস্ত্রীক সুকুমারবাবু ছাড়াও বনলতা মিত্র এবং সিদ্ধার্থ বিশ্বাস নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে তদন্তকারী সংস্থা।