মধুমিতা ভুঁইয়া। ফাইল চিত্র
দীর্ঘদিন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। তবে শেষরক্ষা হল না। সিআইডির হাতে ধরা পড়ে গেলেন মেদিনীপুরের মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কের টাকা নয়ছয়ে প্রধান অভিযুক্ত মধুমিতা ভুঁইয়া। শনিবার ভোরে কলকাতার নিউটাউনের ফ্ল্যাট থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে সিআইডি। এ দিন দুপুরে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করে ধৃতকে ৫ দিনের জন্য হেফাজতে নিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। মধুমিতা ধরা পড়ায় এই মামলায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল চার।
সিআইডি সূত্রের খবর, নিউটাউনের ফ্ল্যাটে কয়েক দিন ধরেই নজর রেখেছিলেন তদন্তকারীরা। শুক্রবার সকালে এক সূত্র মারফৎ তদন্তকারীরা জানতে পারেন, মধুমিতা ফ্ল্যাটে এসেছেন। তারপরই ওখানে হানা দেয় সিআইডি-র দল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কি কিছু স্বীকার করেছেন মধুমিতা? মামলার তদন্তকারী অফিসার নীরেন ভট্টাচার্যের জবাব, “একটা বিষয় স্বীকার করেছে। তদন্ত চলছে।’’
মেদিনীপুর শহরের বার্জটাউনে রয়েছে ‘মহিলা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি’। এই সমবায় ব্যাঙ্কে প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা তছরুপের অভিযোগ সামনে আসে গত মে মাসে। ১৯ মে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির সম্পাদিকা ছিলেন মধুমিতা। ইতিমধ্যে মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন মধুমিতার স্বামী সুকুমার ভুঁইয়া এবং ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ম্যানেজার বনলতা মিত্র। দু’জনই এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে সিদ্ধার্থ বিশ্বাস নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগরের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সিদ্ধার্থ এখন সিআইডি হেফাজতে রয়েছেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই অভিযুক্ত টাকা নয়ছয় কাণ্ডের মূলচক্রী সুকুমার ভুঁইয়ার সহযোগী ছিলেন।
এই সময়ের মধ্যে মধুমিতাদেবী কলকাতারই বিভিন্ন এলাকায় গা ঢাকা দিয়েছিলেন। একাধিক পরিজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সিআইডির এক কর্তা বলছিলেন, ‘‘নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাটে যে উনি দীর্ঘদিন ছিলেন না তা ফ্ল্যাটের অবস্থা দেখেই বোঝা গিয়েছে। চারপাশ অগোছালো। ইতিউতি ধুলোও জমেছে।’’
সিআইডি সূত্রে খবর, এ বার সিদ্ধার্থ এবং মধুমিতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সুকুমার এবং বনলতা যে সব তথ্য দিয়েছেন, সেগুলোর সত্যতা যাচাই করা হবে। সিআইডির এক কর্তার কথায়, ‘‘এই মহিলাকে হেফাজতে নেওয়াটা জরুরি ছিল। উনি ঘটনার অন্যতম চক্রী।’’ মধুমিতাকে নিয়ে ফের ব্যাঙ্কেও হানা দিতে পারেন তদন্তকারীরা।