জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণে ঢিমেতালে কাজের অভিযোগ

ভোগান্তির আশঙ্কায় পরীক্ষার্থীরা   

নন্দকুমার থেকে নরঘাট, চণ্ডীপুর প্রভৃতি সড়কের ধারে একাধিক বাজারের দোকানপাট উচ্ছেদ হয়েছে গত বছর দুর্গাপুজোর আগেই। রাস্তার দু’ধারে গাছও কেটে সাফ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৮ ০২:০৩
Share:

সতর্কতা বোর্ড লাগিয়েই দায় সেরেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। —নিজস্ব চিত্র

কলকাতা থেকে নন্দকুমার হয়ে দিঘা—ব্যস্ত রাজ্য সড়ক জাতীয় সড়কের স্বীকৃতি পেয়েছে কয়েক বছর আগেই। হলদিয়া–মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের নন্দকুমার শ্রীধরপুর মোড় থেকে ওডিশার জলেশ্বর পর্যন্ত ৯১ কিলোমিটার রাস্তা এখন ১১৬ বি জাতীয় সড়ক। জাতীয় সড়কের স্বীকৃতির পর অপ্রশস্থ ওই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে গত বছর।

Advertisement

এর জন্য নন্দকুমার থেকে নরঘাট, চণ্ডীপুর প্রভৃতি সড়কের ধারে একাধিক বাজারের দোকানপাট উচ্ছেদ হয়েছে গত বছর দুর্গাপুজোর আগেই। রাস্তার দু’ধারে গাছও কেটে সাফ করা হয়েছে। নন্দকুমার থেকে চণ্ডীপুর এলাকায় সড়কের পিচের অংশ বাদ দিয়ে দু’ধারে মাটি খোঁড়ার কাজ চলছে। তবে মাটি খোঁড়া চললেও নতুন রাস্তা তৈরির কাজ ঢিমেতালে চলেছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে। মাটি খোঁড়ার ফলে শ্রীধরপুর মোড় থেকে নরঘাট পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার রাস্তার দু’ধারেই কয়েক ফুট গভীর খাদ হয়ে থাকায় গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সড়কের দু’পাশে ফুটপাথ না থাকায় পথচারী এবং সাইকেল, মোটর সাইকেল আরোহীদের প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ফলে সড়কের এই অংশে দুর্ঘটনাও ঘটছে। শুক্রবারই নরঘাটের কাছে বিকেল ৪টে নাগাদ স্থানীয় পাহাড়িচক গ্রামের সঞ্জীব মাইতি মোটর সাইকেলে যাওয়ার সময় রাস্তার কাজে যুক্ত গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লেগে খাদে পড়ে জখম হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। ঘটনার পর ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একে রাস্তার ধারে সরে যাওয়ার জায়গা নেই। তার উপর সম্প্রসারণ কাজের জেরে যানজটে নাজেহাল অবস্থা। ওই সড়কের দু’ধারেই একাধিক মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও রয়েছে নন্দকুমার কলেজ। আগামী সোমবার থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। ফলে ওই সড়কে বাস, গাড়ি, মোটরসাইকেল, সাইকেলে চেপে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার পথে ভোগান্তির শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ওই সব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে অভিভাবকেরা।

Advertisement

মহারাজা নন্দকুমার হাইস্কুলের শিক্ষক গোপাল মাইতি বলেন, ‘‘এদিনই দুর্ঘটনার হাত থেকে কোনওরকমে রক্ষা পেয়েছেন তিনি। বাড়ি থেকে বেরিয়ে নন্দকুমার কলেজের কাছে সড়ক দিয়ে সাইকেলে স্কুলে আসছিলাম। ভবানীপুর বাজারের কাছে পিছন থেকে আসা একটি লরি বাসকে ওভারটেক করতে গিয়ে আমার কাছে চলে আসে। বিপদ সামলাতে গিয়ে সাইকেলে নিয়ে সড়কের ধারে ফুট কয়েক নীচে খাদে পড়ে চোট পেয়েছি।’’ তিনি জানান, সড়ক ধরে সাইকেলে স্কুলে যাতায়াত করা ছাত্রছাত্রীরা খুবই সমস্যায় পড়েছে। কয়েক দিন পরেই শুরু মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদেরও ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে। এবিষয়ে প্রশাসনের নজর দেওয়া প্রয়োজন।

পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার বলেন, ‘‘নন্দকুমারের কাছে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ রয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য যান নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন